দেশ-জসীমউদ্দীন

Home Page » সাহিত্য » দেশ-জসীমউদ্দীন
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৪



in55555555555dex.jpg

খেতের পরে খেত চলেছে, খেতের নাহি শেষ
সবুজ হাওয়ায় দুলছে ও কার এলো মাথার কেশ।
সেই কেশেতে গয়না ও পরায় প্রজাপতির ঝাঁক,
চঞ্চুতে জল ছিটায় সেথা কালো কালো কাক।
সাদা সাদা বক-কনেরা রচে সেথায় মালা,
শরৎকালের শিশির সেথা জ্বালায মানিক আলা।
তারি মায়ায় থোকা থোকা দোলে ধানের ছড়া,
মার আঁচলের পরশ যেন সকল অভাব-হরা।
সেই ফসলে আসমানীদের নেইকো অধিকার,
জীর্ণ পাঁজর বুকের হাড়ে জ্বলছে হাহাকার।

বনের পরে বন চলেছে বনের নাহি শেষ,
ফুলের ফলের সুবাস ভরা এ কোন্ পরীর দেশ?
নিবিড় ছায়ায় আঁধার করা পাতার পারাবার,
রবির আলো খন্ড হয়ে নাচছে পায়ে তার।
সুবাস ফুলের বুনোট করা বনের লিপিখানি,
ডালের থেকে ডালের পরে ফিরছে পাখি টানি।
কচি কচি বনের পাতা কাঁপছে তারি সুরে,
ছোট ছোট রোদের গুড়ো তলায় নাচে ঘুরে,
মাথার পরে কালো কালো মেঘেরা এসে ভেড়ে
বুনো হাতীর দল এসেছে আকাশখানি ছেড়ে।
এই বনেতে আসমানীদের নেইকো অধিকার,
জীর্ণ পাঁজর বুকের হাড়ে জ্বলছে অনাহার।

নদীর পরে নদী গেছে নদীর নাহি শেষ,
কত অজান গাঁ পেরিয়ে কত না-জান দেশ।
সাত সাগরের পণ্য চলে সওদাগরের নায়,
সুধার ধারা গড়িয়ে পড়ে গঞ্জ নগর ছায়।
চখায় মুকর বালুর চরা হাসে কতই তীরে,
ফুলের বনে রঙিন হয়ে যায় বা কভু ধীরে;
কত মিনার-সৌধ চূড়ার কোল ঘেঁষিয়া যায়,
কত শহর হাট-বন্দর বাজার ফেলে বায়।
কত নায়ের ভাটিয়ালীর গানে উদাস হয়ে,
নদীর পরে নদী চলে কোন অজানায বয়ে।
সেই নদীতে আসমানীদের নেইক অধিকার,
জীর্ণ পাঁজর বুকের হাড়ে জ্বলছে হাহাকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:০২:০৩   ৩৮৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ