বিয়ে নামক সম্পর্কটা মাঝে মাঝে তার ষোল আনাই পূরণ করে। প্রতিটি সম্পর্কের একটি নিজস্ব গতি এবং ভিন্ন আবেদন থাকে। এই সম্পর্কে জড়ানো এবং তা বহন করা নারী-পুরুষের জীবনের সবচেয়ে বড় একটি অধ্যায়।একে অপরকে ভালোভাবে জানতে, বুঝতে, এমনকি ভালোবাসার সঙ্গী করে পেতেই বিয়ের আয়েজন।
পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের এই মেলবন্ধন সন্তান জন্মদানেরও বৈধতা দান করে।এতোকিছু সত্বেও কখনো সম্পর্কধারায় ব্যত্তয় ঘটে।নানা ভুল বোঝাবুঝি, ন্যায় অন্যায়ের জের ধরে বৈধ এ সম্পর্কে ঘটে যায় বিচ্ছেদ।বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে যে কারণ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তা হলো :
একে অপরের কথায় শ্রদ্ধা না দেখানো : স্বামী যখন স্ত্রীকে কোন কাজের আদেশ বা নিষেধ করেন, তখন স্ত্রী তা না শুনে নিজের ইচ্ছামতো চললে তবে তা ক্ষতিকর। ঠিক তেমনি স্বামীর কোন ভুল আচরণে স্ত্রীর বাধা না মানলেও একই অবস্থা সৃষ্টি হয়। এতে সম্পর্কের ভাঙন দেখা দেয়।
ছাড় দেয়ার মানসিকতার অভাব : একে অপরকে ছাড় দেয়ার মানসিকতা থাকলে ভুল শোধরানোর সুযোগ থাকে। কিন্তু তা না থাকলে যে যার অবস্থানে থেকে ভুলটাই বেশি প্রাধান্য দিতে থাকে। একসময় দেখা যায় কেউ কাউকে কিছু না বুঝিয়েই শুধু ভুলগুলো নিয়ে ঝগড়ায় মেতে থাকে। এর পরিনতিতে দুজনের প্রতি আস্থাহীনতা দেখা দেয়। মনোমালিন্য থেকে শুরু হয় বড় কোন দুর্ঘটনার।হতে পারে বিবাহ বিচ্ছেদ।
একে অপরের কাছে মূল্যহীনতা : ধরুন কোথাও দুজনে মিলে বেড়াতে বের হয়েছেন। সেখানে স্ত্রীর প্রয়োজন, পছন্দ বা প্রাধান্য দিতে স্বামীর কার্পণ্যতা মোটেই গ্রহনযোগ্য নয়।ঠিক তেমনি স্বামীকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যকে সময় দেয়াটাও স্ত্রীর উচিৎ নয়। কিছুদিন ধরে এমন সমস্যা চলতে থাকলে একে অপরের কাছে মূল্যহীন বলে প্রমাণিত হয়। মনের মধ্যে সৃষ্টি হয় বিষন্নতা।খারাপ লাগার কারনে একসময় সম্পর্ক গড়ায় তুমুল ঝগড়ায়। একসময় তার সমাপ্তি ঘটে বিচ্ছেদে।
অপরকে বেশি প্রাধান্য দেয়া : ছুটির দিন গুলোতে বা কোন অনুষ্ঠানে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে সময় না দিয়ে অন্যকে বেশি সময় দিচ্ছে।এটা যেমন স্বামীর পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব না তেমনি স্ত্রীর পক্ষেও না।এতে উভয়ের মনেই নানা প্রশ্নের জন্ম হয়।একে অপরকে সন্দেহ করতে শুরু করে।একজনের জীবনে অপরের অবদান লোপ পায়। তখন গুরুত্বও কমে আসে। আর একসময় তা বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটাতে পারে।
আয় ব্যয়ে উভয়ের অসম অবদান : সংসারে সুখ আনতে ঠিকভাবে উপার্যন করা জরুরী।তার সঠিক ব্যবহারটাও সমান জরুরী।আর তাই দরকার দুজনের সঙ্গে দুজনের সমান ভাগাভাগি।কিন্তু যে সংসারে একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি না করেই খরচ করে। কেউ কাউকে গণ্য করে না। সে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয় সহজেই। আমাদের সমাজের মেয়েরা সব সময় উপার্যনের সঙ্গে জড়িত থাকে না। তার প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দেয়া, তার প্রয়োজন পুরণের কোনটায় যদি স্বামী না করেন তবে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়।
শারীরিক মিলনে সাড়া না দেয়া : স্বামী হয়তো চাচ্ছেন কিন্তু স্ত্রী নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছেন। ঠিক তেমনি স্বামীও নানা অজুহাতে এড়িয়ে যান। এভাবে শারীরিক মিলনে একে অপরকে এড়িয়ে চলাটা একসময় দুজনকেই বিক্ষুব্ধ করে তোলে। আস্তে আস্তে দুজনের প্রতি ভালোবাসার টান মুছে যেতে থাকে। এর পরিনতিতে ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদ।
স্বামীকে উস্কানী দেয়া : কিছু সংসারে দেখা যায় যৌতুকের লোভে বন্ধু-বান্ধব বা স্বামীর বাড়িরে লোকজন যেমন শাশুড়ি, ননদ, দেবর সারাক্ষণ স্বামীকে স্ত্রীর বিরুদ্ধে উস্কানি দিতে থাকে। এতে স্বামীর মন বিষিয়ে যায়। অনেক সময় সঠিক কারণ যাচেই বাছাই না করেই স্ত্রীর উপর চড়াও হয়। এই ভাবে দুজনের সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেয়। এভাবে বাংলাদেশে হাজারো মেয়ের সংসার ভাঙ্গে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫০:৩২ ৩৮০ বার পঠিত