বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেছেন, সরকার নেতৃত্ব শূন্য করে দেশকে করদরাজ্য বানানোর জন্যই জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে একের পর এক মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জনগণ এই ফরমায়েসী দণ্ডাদেশ প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে নেমে এসেছে। দেশের মানুষ সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল পালন করে এই জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে গণঅনাস্থা জানিয়েছে। তারা কামারুজ্জামানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও ফ্যাসীবাদী আওয়ামী সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই রাজপথ ছাড়বে না। তিনি কামারুজ্জামানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ফরমায়েসী দণ্ডাদেশ বাতিল করে অবিলম্বে জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সরকার যে আগুন নিয়ে খেলছে সে আগুন তাদের জন্যই আত্মঘাতি হবে বলে তিনি সরকারকে সতর্ক করে দেন।
তিনি আজ রাজধানীর কোতোয়ালীতে হরতালের সমর্থনে এক বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। মিছিলটি নয়াবাজার থেকে শুরু হয়ে বাবুবাজারে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোতয়ালী থানা আমির অধ্যক্ষ আবু সা’দ, সেক্রেটারি আল আমীন খন্দকার, জামায়াত নেতা গিয়াস উদ্দীন, আব্দুস সোবহান, ছাত্রনেতা তানহার আলী প্রমুখ।
দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ষড়যন্ত্রমুলক ও ফরমায়েসী দণ্ডাদেশ বাতিল করে তাকেসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে জামায়াত আজ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা এ হরতালের ডাক দেয়।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া আরো বলেন, সরকার দেশকে মেধাশূন্য করতেই কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। প্রসিকিউশন কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ, তথ্য-উপাত্ত ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছে তাতে মৃত্যুদণ্ডতো দূরের কথা তাকে এক মহূর্তের জন্যও সাজা দেওয়ার সুযোগ নেই। ঘোষিত রায়ে জামায়াতকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সংগঠনটির বিরুদ্ধে অনাকাঙ্খিতভাবে বিষোদগার করা হয়েছে। যেসব ডকুমেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে দণ্ড দেওয়া হয়েছে সেগুলো পুরোপুরিই অপ্রদর্শিত। আসলে শোনা স্বাক্ষী, স্ববিরোধী ও পরস্পর বিরোধী স্বাক্ষের ভিত্তিতে কামারুজ্জামানকে গুরুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। যা কোনো আইনী ও বিচারিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়। পুরো মামলাটিই মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। এই প্রহসন ও ফরমায়েসী দণ্ডাদেশ দেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। তিনি কামারুজ্জামান, আল্লামা সাঈদী ও আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ফরমায়েসী দণ্ডাদেশ বাতিল ও প্রহসনের বিচার বন্ধ করে অবিলম্বে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
আদাবর থানা : সকাল-সন্ধ্যার হরতলের সমর্থনে আদাবর থানা জামায়াতের উদ্যোগে রাজধানীর মিনাবাজারের সামনে ও পেট্রোল পাম্প এলাকায় নেতাকর্মীরা মিছিল, সমাবেশ ও পিকেটিং করে। এ সময় পিকেটাররা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে।
লালবাগ থানা : লালবাগ থানা জামায়াতে উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলটি নবাবগঞ্জ থেকে শুরু হয়ে লালবাগ মোড়ে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা আমির গোলাম মহিউদ্দীন সেলিম, জামায়াত নেতা শামীমুল বারী, এন আলম, নজরুল ইসলাম, সেলিম হোসেন, নজরুল ইসলাম ও ছাত্রনেতা আশরাফুল আলম প্রমুখ।
চকবাজার থানা : হরতালের সমর্থনে চকবাজার থানার উদ্যোগে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি চকবাজার থেকে শুরু হয়ে মৌলভীবাজারে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি আবুল কাসেম, জামায়াত নেতা সানাউল্লাহ, সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রহমান প্রমুখ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
কামরাঙ্গীরচর থানা : হরতালের সমর্থনে কামরাঙ্গীরচর থানার উদ্যোগে নগরীতে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি সেকশন থেকে শুরু হয়ে নবাবগঞ্জে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা সেক্রেটারি আবু আব্দুল্লাহ, জামায়াত নেতা মাসুম বিল্লাহ, শাহ আলম আকন্দ, ছাত্রনেতা হেলাল উদ্দীন প্রমুখ।
রমনা থানা : হরতালের সমর্থনে রমনা থানার উদ্যোগে মগবাজার ওয়্যারলেস গেইটে পিকেটাররা সকাল ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ করে রাখে। এ সময় পিকেটারদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জামায়াত ও শিবিরের চার নেতাকর্মী আহত হন। পরে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রামপুরা থানা : রমনা থানা জামায়াতের উদ্যোগে হরতালের সমর্থনে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রামপুরা থেকে শুরু হয়ে বনশ্রীতে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, হাসান ঈমান, আতাউর রহমান সরকার, ছাত্রনেতা আব্দুল কাদের প্রমূখ। সমাবেশ থেকে ফেরার পথে পুলিশ নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
উত্তরা পূর্ব থানা : উত্তরা পূর্ব থানা জামায়াতের উদ্যোগে হরতালের সমর্থনে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলটি নগরী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন থানা আমির, থানা সেক্রেটারি বেলায়েত হোসাইন সুজা, জামায়াত নেতা মোঃ শাহ আলম, ছাত্রনেতা তাশরীফ প্রমুখ।
গাবতলী : হরতালের সমর্থনে জামায়াত ও শিবির নেতাকর্মীরা নগরীর গাবতলীতে মিছিল, সমাবেশ ও পিকেটিং করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দারুসসালাম থানা আমির মাওলানা বেলাল হোসাইন, শাহআলী থানা আমির মিজানুল হক, মিরপুর পূর্ব থানা আমির মাহফুজুর রহমান প্রমূখ।
মিরপুর কাজীপাড়া : হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা মিরপুর কাজিপাড়ায় পিকেটিং করে। পিকেটাররা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৮:১৯ ৪৯২ বার পঠিত