তমাল,ডেস্ক রিপোর্টঃআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যরা এই পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এই পদ্ধতি সফল হলে পরবর্তী সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশী ভোটারদেরও অনলাইন ভোটগ্রহণ পদ্ধতির আওতায় আনা হবে। পোস্টাল ব্যালটের পরিবর্তে অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা চালু করতে এ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চালু করতে না পারলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শুধু ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্য অনলাইন ভোটিংয়ের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। তারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম চালু যেখানে হয়নি, সেখানে মাত্র ১৫ থেকে ২০ লাখ লোকের জন্য অনলাইন ভোটিং করার পরিকল্পনা শুরু করেছে ইসি। এক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালটের পাশাপাশি এই প্রযুক্তি ব্যবহারের খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর আইন সংশোধনের কাজ শুরু করবে ইসি।
ইসির উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, কমিশন সভায় উপস্থাপনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইসির আইটি শাখা অনলাইন ভোটিং বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দিয়ে ‘বাস্তবসম্মত’ বিবেচিত হলে হয়তো এ নিয়ে পরবর্তী নির্দেশনা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির উপসচিব আবদুল অদুদ জানান, সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাসহ কয়েক লাখ লোক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকায় ভোট দিতে পারেন না। তাদের জন্য নিয়ম মেনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেয়ার সুযোগ থাকলেও তা অনেকটা ‘অকার্যকর’। এ অবস্থায় ইসি সচিব ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভোট দিতে বিকল্প কিছু করা যায় কিনা তা নিয়ে প্রস্তাবনা উপস্থাপনের জন্য বলেছেন। সেজন্য পোস্টাল ব্যালটের পাশাপাশি অনলাইন ভোটিং চালুর প্রস্তাবটি তুলে ধরা হচ্ছে।
তিন ধরনের কর্মকর্তার জন্য অনলাইন ব্যবস্থা : এক ধরনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা নিজ নির্বাচনী এলাকার ভোটার কিন্তু ভোট কেন্দ্র ভিন্ন। দ্বিতীয় ধরনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে দায়িত্ব পেয়েছেন কিন্তু তার জেলার মধ্যেই রয়েছেন তিনি। এই দুই ধরনের ভোট নেয়া অনেকটা সহজ মনে করেন ইসি কর্মকর্তারা। তৃতীয় ধরনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা যারা নিজ জেলার বাইরে দায়িত্ব পান, সেক্ষেত্রে তাদের ভোট নেয়ার প্রক্রিয়া অনেকটা জটিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমদের বেশিরভাগই ভিন্ন জেলায় দায়িত্বে থাকেন।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে সংসদের ৩০০ সাধারণ আসনে ব্যালট পেপার অনলাইনে দেয়া থাকবে। প্রত্যেক সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অনলাইনে ভোটদানের জন্য একটি ভোট কেন্দ্র বা ভোট কক্ষ স্থাপন করা হবে। এমন ভোট কেন্দ্র বা ভোট কক্ষের জন্য প্রিসাইডিং অফিসারসহ পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে এবং এ কাজের জন্য ওইসব কর্মকর্তাকে যথাযথভাবে প্রশিক্ষণও দেয়া হবে। ভোট কেন্দ্র বা ভোট কক্ষে অনলাইনে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার কিনা তা যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা থাকবে। নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটগ্রহণের দিনের অন্তত দুই দিন আগে সুবিধামতো ও পূর্বনির্ধারিত সময়ে অনলাইনে ভোটদান করতে পারবেন। কমিশনের আইটি উইং এ বিষয়ে যাবতীয় কারিগরি ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:০৫:৫৭ ৩৪৮ বার পঠিত