বঙ্গ-নিউজ:নিজস্ব প্রতিবেদক:অ্যাজমা বা হাঁপানি ফুসফুসের একটি দূরারোগ্য প্রদাহজনিত রোগ, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত বা বাধাগ্রস্ত করে। সমস্যা প্রকট হলে, চিকিৎসকরা ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি ইনহেইলার ব্যবহারের পরামর্শ দেন। হাঁপানির মতো ব্যাধি প্রাণঘাতী রূপও ধারণ করতে পারে।
তাই সময়মতো পদক্ষেপ নেয়া অপরিহার্য। শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়া ও ছাড়ার সময় শনশন জাতীয় শব্দ ও কষ্টের অনুভূতি, কাশি (কখনও সাধারণ বা কখনও ঘড়ঘড় শব্দে), বুক শক্ত অনুভূত হওয়া, ছোট ছোট দমে শ্বাস নেয়া ও ছাড়া হাঁপানির প্রধান লক্ষণ। যে কোন বয়সে হাঁপানি হতে পারে। সাধারণভাবে, শৈশবেই হাঁপানির সমস্যা শুরু হয়। হাঁপানি শনাক্ত হওয়ার পর প্রথমেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে মনটাকে শক্ত করে ফেলতে হবে। হাঁপানির কোন নিরাময় নেই।
নিয়ন্ত্রণই তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মৃদু, মাঝারি, বা তীব্র, অ্যালার্জিক বা নন-অ্যালার্জিক যে ধরনেরই হোক না কেন, হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে রেখে সম্পূর্ণ সুস্থভাবে জীবনধারণ করা সম্ভব। নিচে প্রাকৃতিকভাবে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস উপস্থাপন করা হলো:
১) ধূমপান, বায়ু দূষণ, ধুলোবালি, পোষাপ্রাণী:
যে কারণগুলো হাঁপানির সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয়, প্রথমেই সেগুলোকে চিহ্নিত করুন। ধূমপান, বায়ু দূষণ, ধুলোবালি প্রভৃতি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখুন। পোষা প্রাণীটিও আপনার হাঁপানি বাড়ার কারণ হতে পারে। ধূমপান ত্যাগ করুন এবং মুখে ভালো মাস্ক পরে বাইরে বের হওয়ার অভ্যাস করুন। কয়েকটি মাস্ক কিনে রাখুন। একটি ময়লা হলে, সেটির পরিবর্তে ধোয়া ও পরিচ্ছন্ন একটি মাস্ক পরুন।
২) শরীরচর্চা:
নিয়মিত প্রতিদিন ব্যায়াম আপনার ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায়। হার্ট সুস্থ থাকার পাশাপাশি আরও সবল হয়। শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, হাঁপানির উপসর্গগুলো সহজে দেখা দেয় না।
৩) ফলমূল ও শাক-সবজি:
ফলমূল ও শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার, যা আপনার ফুসফুসকে সবল রাখে এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও ফুসফুসকে সহজে আক্রান্ত করতে পারে না।
এটা ঠিক যে ফরমালিন ও বিষাক্ত রাসায়নিকমুক্ত ফল কেনা রীতিমতো দুঃসাধ্য ব্যাপারে পরিণত হচ্ছে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমরা ফরমালিন মুক্ত খাবার খেতে পারি। প্রচলিত যে কয়েকটি পদ্ধতি ফরমালিন দূরীকরণে কার্যকর বলে প্রমানিত হয়েছে, তার একটি হচ্ছে শুধু পানিতে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা ফলমূল, শাক-সবজি বা মাছ ভিজিয়ে রাখা।
লবণ-পানির দ্রবণে এ জাতীয় খাদ্যদ্রব্য ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে। এভাবে ৫০-৯০ শতাংশ ফরমালিন দূর হয়। তবে ফরমালিন দূরীকরণের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে, ভিনেগার ও পানির মিশ্রণে ১০ থেকে ১৫ মিনিট মাছ, ফলমূল বা শাকসবজি ডুবিয়ে রাখা। মাছের ক্ষেত্রে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই চলবে। এ পদ্ধতিতে শতকরা ১০০ ভাগ ফরমালিন দূর হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। পানিতে ১০ শতাংশ আয়তন অনুপাতে এক ফোঁটা ভিনেগার মেশাতে হবে।
৪) ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:
মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। মিউকাস মেমব্রেইন বা শ্লেষ্মা ঝিল্লির প্রদাহজনিত কোন সমস্যা প্রতিরোধ করে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। বিভিন্ন গবেষণাতেও এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।
৫) স্বাস্থ্যকর ওজন:
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অতিরিক্ত ওজনে হাঁপানি বাড়ার সমূহ ঝুঁকি থাকে। তাছড়াও, বাড়তি ওজন বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে প্রাণঘাতী রূপ ধারণ করতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৪:৫৫ ৪৪৬ বার পঠিত