মধ্যবিত্তরা আবাসন সংকটে

Home Page » ফিচার » মধ্যবিত্তরা আবাসন সংকটে
সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১২



38481060.jpgএম. এ. সাত্তার, বঙ্গনিউজ ডট কম: প্রায় দেড় কোটি মানুষের ঢাকা শহরে সবচেয়ে দুর্লভ বিষয়টি হচ্ছে বাসস্থান। জমি কিনে বাড়ি করার স্বপ্ন তো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে সেই কবে। নিদেনপক্ষে মাথা গোঁজার ঠাঁই একটি ফ্ল্যাট। উচ্চমূল্যের কারণে সেই স্বপ্নও এখন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ছলে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারে সম্প্রতি একটি পত্রিকায় এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ডেভেলপার কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় লক্ষাধিক ফ্লাট গড়ে আছে। ক্রেতা নেই। দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় মধ্যবিত্তরা এসব ফ্লাটের ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে। ঢাকায় বর্তমান বাজারে মোটামুটি মানের একটি ফ্ল্যাটের দাম প্রায় এক কোটি টাকার মতো। লোকেশন ভেদে এসব ফ্ল্যাটের দাম ২ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকার মধ্যে। ঢাকার এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে ৫০ লাখ টাকার উপরে দাম পড়বে। প্রসঙ্গত, উত্তরাতে রাজউক ‘মধ্যম ও স্বল্প’ আয়ের মানুষের জন্য যে ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে তার দাম নির্ধারণ করেছে ৩৫ লাখ টাকা। এর সঙ্গে ইউটিলিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর চার্জ যুক্ত হবে। ফলে রাজউকের ফ্ল্যাটের দামই পড়ে যাবে প্রায় ৪০ লাখ টাকার  মতো। বলার অপেক্ষা রাখে না এই দামে ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন না স্বল্প বা মাঝারি আয়ের সাধারণ মানুষ। স্বল্পবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের স্বপ্ন তাহলে কি সব সময় নাগালের বাইরেই থাকবে?
আবাসন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমির উচ্চমূল্যের কারণেই  ফ্লাটের দাম কমানো যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ক্রেতাশূন্য হয়ে ফ্ল্যাটের বাজার লাটে উঠেছে। বর্তমানে প্লট ও ফ্ল্যাটের মূল ক্রেতা হচ্ছেন দেশের উচ্চবিত্ত ও প্রবাসীরা। যাদের সংখ্যা সীমিত। শহরের বৃহত্তর যে মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী তাদেরকে ক্রেতার আওতায় আনা যাচ্ছে না। অথচ আনাটা জরুরি। জানা যায়, ঢাকা শহরে বর্তমানে প্রায় ২৫ লাখ পরিবারের ৮৩ শতাংশ অর্থাৎ ২০ লাখ ৭৫ হাজার পরিবারেরই বসবাসের নিজস্ব কোনো বন্দোবস্ত নেই। জনসংখ্যার হিসাবে প্রায় সোয়া এক কোটি মানুষেরই বাসস্থান নেই এ শহরে। এ বিপুল সংখ্যক মানুষকে ভাড়া বাসার ওপর নির্ভর করতে হয়। এদের একটা অংশ নিজস্ব একটা ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন দেখেন। দাম সাধ্যের মধ্যে হলে তারা কিনতে পারতেন এবং দেশের আবাসন সংকটের কিছুটা সুরাহা হতো। যেহেতু মাঝারি আয়ের মানুষের সংখ্যাই বেশি কাজেই তাগের আবাসনের ব্যবস্থার ব্যাপারে সরকারের ভাবনা থাকা দরকার। সে লক্ষ্যে সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু সরকারি উদ্যোগে আবাসন প্রকল্প ‘স্বপ্ননগর’ -এ ফ্ল্যাটের যে দাম পড়বে তাও রাজধানীর স্বল্প ও মধ্যবিত্তদের জন্য কতোটা সুবিধা দেবে সে নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। মোদ্দা কথা হলো- বর্তমানে মধ্যবিত্তের জন্য ঢাকা শহরে কোনো সুখবর নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট আকারের ফ্ল্যাট নির্মাণ একটা সুরাহা হতে। বর্তমানে বেশিরভাগ ফ্ল্যাটই হাজার বর্গফুট ও তার ওপরে। সাড়ে ছয়শ বা সাতশ বর্গফুটের ফ্ল্যাট নির্মাণ করলে ফ্ল্যাটের দাম অনেক মধ্যবিত্তেরই নাগালের মধ্যে আসবে। তাই অপেক্ষাকৃত ছোট ফ্ল্যাট নির্মাণের ওপর গুরূত্ব দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। জাপানসহ বিশ্বের অনেক দেশেই ‘ছোট ফ্ল্যাটে’র ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এ দেশেও মানুষের আয়ের স্তর বুঝে ছোট ফ্ল্যাটের ব্যবসা সম্প্রাসারণ করলে আবাসন প্রত্যাশীরা গেমন উপকৃত হবেন, তেমনি লাভবান হবেন ডেভেলপাররা। দেশের আবাসন সমস্যাও লাঘব হবে। তবে রাজধানীতে জমির দাম যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে সব প্রত্যাশাই দূরাশায় পরিণত হবে। তাই ফ্ল্যাটের দাম কমাতে জমির মূল্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেজিস্ট্রেশনসহ আনুষঙ্গিক খরচ কমানোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। স্লোগান সর্বস্ব নয়, সত্যিকার অর্থেই সীমিত আয়ের মানুষের জন্য আবাসন সুবিধা সৃষ্টিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানকেই পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৯:৪৫   ৭৮১ বার পঠিত  




ফিচার’র আরও খবর


অ্যানেন্সেফ্লাই কী? - রুমা আক্তার
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত : স্পিকার ; ১০০০ নারী উদ্যোক্তা’র মধ্যে ৫ কোটি টাকার অনুদান প্রদান
“ম্রো’ আদিবাসীর গো হত্যা’ অনুষ্ঠাণ ” - তানিয়া শারমিন
আলোকিত স্বপ্ন নিয়ে তৃতীয় বর্ষে রবিকর ফাউন্ডেশন
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন রক্ষায় প্রয়োজন জেন্ডার সংবেদনশীল নীতির পর্যালোচনা
জিনগত ত্রুটির অপর নাম “ডাউন সিনড্রোম”- রুমা আক্তার
মোহাম্মদ শাহ আলমের জীবন ও কর্ম
ইসফাহান নেসফে জাহান
সিলেটে গ্রুপ ফেডারেশনের কর্মশালায় বির্তকিত মুরাদ- আয়োজকদের দুঃখ প্রকাশ
ডলারের দাম যেভাবে বাড়ছে, টাকার দাম কেন কমছে

আর্কাইভ