ডেস্ক রিপোর্টঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী তিন মাসে তিনটি দেশ সফর করবেন। এর মধ্যে মধ্য অক্টোবরে ইতালি এবং নভেম্বরে নেপাল সফর নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর মালয়েশিয়া সফরও অনেকটাই নিশ্চিত।
দশম এএসইএম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী এ মাসেই তার নির্ধারিত মিলান সফরে যাচ্ছেন।
এরপর তিনি নভেম্বরে নেপালে অনুষ্ঠিত হবে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন এবং ডিসেম্বরে কুয়ালালামপুর সফরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আয়োজনে অক্টোবরের ১৬-১৭ তারিখে ইতালিতে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের নিয়ে দশম এএসইএম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা তার ইতালি সফরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সাথে বৈঠকে মিলিত হবেন।
২৭টি ইউরোপীয় দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ইউরোপীয় কমিশন এবং এশিয়ার ১৬টি দেশ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।
ইউরোপ এবং এশিয়ার ৪৯টি দেশ ও সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত এশিয়া ইউরোপ মিটিং (এএসইএম) নামের এই সংগঠনে ২০১২ সালে বাংলাদেশ যোগদান করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, এএসইএম মূলত কাজ করে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং উন্নয়ন নিয়ে। ফলে এখানে বাংলাদেশর বিশাল স্বার্থ নিহিত আছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক ছোট ছোট দেশ এএসইএম’র সদস্য কিন্তু বাংলাদেশের সাথে তাদের খুব বেশি পারস্পরিক আদান-প্রদান নেই।
তিনি আরো বলেন, ‘এ ধরনের ফোরাম বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে একই টেবিলে বসে কফি খাওয়ার পাশাপাশি তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয় আদান-প্রদান ও সহযোগিতার একটি নতুন ক্ষেত্র তৈরি এবং যদি কোনো বিতর্কিত বিষয় থাকে সেটি সমাধান করার সুযোগ করে দেয়।’
এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে একটি নতুন অংশীদারিত্ব সর্ম্পক গড়ে তুলতে ১৯৯৬ সালে ব্যাংককে এএসইএম ২৬টি সদস্য দেশ নিয়ে তার যাত্রা শুরু করে । এটিই একমাত্র প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত দেশগুলো স্বতন্ত্রভাবে একে অপরের সাথে আলোচনা করতে পারেন।
সার্ক শীর্ষ সম্মেলন
সার্ক সম্মেলনের কর্মসূচি শুরু হবে ২২ নভেম্বর থেকে এবং শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে নভেম্বরের ২৬ ও ২৭ তারিখে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানা, শীর্ষ সম্মেলনের পূর্বে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর সার্ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণা চূড়ান্ত হবে এবং এটি অনুমোদনের জন্য সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘এ বছর সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের মূল ফোকাস হবে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন । এ অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে সদস্য দেশগুলোকে সংহত করার জন্য সদস্য দেশগুলো থেকে একটা চাপ রয়েছে।’
সদস্য দেশগুলো মোটরপথ ও রেলপথের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে যা সম্মেলনে অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। যদি এটি সম্মেলনের মাধ্যমে অনুমোদন হয়, তবে এটি এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে একটি বড় ধরনের প্রভাব রাখবে।’
মোটরপথ চুক্তি অনুযায়ী প্রাইভেট কার, বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও বাণিজ্যিক কার্গো এ অঞ্চলগুলোর মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারবে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান সার্কের বর্তমান সদস্য।
মালয়েশিয়া সফর
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক গত বছরের নভেম্বর মাসে কলম্বোতে অনুষ্ঠিত ২৩তম কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে যোগদান শেষে ঢাকা সফর করেন।
সরকারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি হবে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি দ্বিপাক্ষিক সফর।’
তিনি জানান, কুয়ালালামপুর প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য ডিসেম্বরের ৩ তারিখ প্রস্তাব করেছে কিন্তু ঢাকা এ ব্যাপারে এখনোও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
ওই কর্মকর্তা বলেন, হাসিনা ও নাজিব রাজাকের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় জনশক্তি রপ্তানি ও বিনিয়োগের বিষয়ে প্রাধান্য দেয়া হবে।
তিনি জানান, উভয় সরকারই ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা’ বিষয়ের উপর জোর প্রদান করছে এবং সফরে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:০৬:০৯ ৩৭৩ বার পঠিত