বঙ্গ-নিউজ ডট কম: ঢাকা: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বিতর্কিত বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেছেন, “মুখফোড়রা অনেক কথাই বলেন। এটা তাদের স্বাধীনতা। এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। আশা করি আপনারাও এটা গ্রহণ করবেন না।”
মঙ্গলবার সকালে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাজেদা এসব কথা বলেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এস এম কামাল, সুজিৎ রায় নন্দি প্রমুখ।
সাজেদা চৌধুরী বলেন, “কে কী বলল তাতে কান দেবেন না। বঙ্গবন্ধু আমাদের যা দিয়ে গেছেন তা নিয়ে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। আর সজীব ওয়াজেদ জয় কে তা সবাই জানে।”
তিনি বলেন, “লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন’ যার যার ধর্ম তার তার। সামনে ঈদ, পূজা। এই উৎসবে আমাদের কোনো ভেদাভেদ নেই। আমাদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ। হিন্দুদের পূজা। তাদের পূজাতে আমরাও যাই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন খালেদা জিয়ার হাতে রক্ত। অথচ গতকাল খালেদা জিয়া বলেছেন শেখ হাসিনার হাতে রক্ত। এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানাতে চাইলে বলেন, “এসব পাল্টাপাল্টি কথার উত্তর আমি দেব না। কখনো দিই না।”
প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের প্রশাংসা করে সাজেদা চৌধুরী বলেন, “প্রচার ও প্রকাশনা সেলে হাছান মাহমুদ ও অসীম কুমার উকিল খুব ভালো কাজ করছে। তারা আমাকে তাদের প্রোগ্রামে ডেকেছে এজন ধন্যবাদ। আমি আশা করিনি এখানো আপনাদের এতজনকে পাবো।”
এদিকে গত রোববার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এক সভায় দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে ‘স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ বেয়াদব’ বলে অভিহিত করেন এবং তার কঠোর সমালোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, রোববার নিউ ইয়র্কে সফররত মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী পবিত্র হজ প্রসঙ্গে বলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী।”
তিনি বলেন, “এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনো কাম নাই। এদের কোনো প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।”
মন্ত্রী বলেন, “এভারেজে যদি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ লোক হজে যায় প্রত্যেকের পাঁচ লাখ টাকা করে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়’। হজ কিভাবে এসেছে এর ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কিভাবে চলবে। তারাতো ছিল ডাকাত। তখন একটা ব্যবস্থা করলো যে আমার অনুসারীরা প্রতিবছর একবার একসাথে মিলিত হবে। এরমধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে।”
তাবলিগ জামাতের সমালোচনা করে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “তাবলিগ জামাত প্রতি বছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদেরতো কোনো কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।”
তিনি তার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তনয় সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কথায় কথায় আপনারা জয়কে টানেন কেন। ‘জয় ভাই’ কে। জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নয়। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ারও কেউ নন।”
মন্ত্রীর এই বক্তব্যে দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মন্ত্রীর অপসারণসহ তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে ইসলামী দলগুলো। তারা এই ইস্যুতে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১২:৩৩ ৩৪৭ বার পঠিত