বঙ্গ-নিউজ:ঢাকা: সারাদেশের বিচারালয়ে যখন মামলার জট তখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেখা দিয়েছে মামলার সংকট। বর্তমানে দুই ট্রাইব্যুনালে দুই মামলার বিচার কাজ চলছে।ট্রাইব্যুনাল-১ এ চলছে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি পিরোজপুরের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ। আর ট্রাইব্যুনাল-২ এ চলছে জামায়াতের নায়েবে আমির পাবনার জেলার আব্দুস সুবহানের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ।
চলমান আর কোনো মামলা না থাকায় আশা করা যায় আগামী এক মাসের মধ্যে এ দুটি মামলার কাজও সমাপ্তি ঘটবে। তবে ট্রাইব্যুনাল-১ কিশোরগঞ্জের হাসান আলীর মামলাটি শুরু হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
প্রসঙ্গত, বিচারালয়ে জমে থাকা মামলার জট কমাতে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে জেলা ও মহানগর আদালতের বিচারক ও আইনজীবীদের সমন্বয়ে মামলা ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মামলার চাপ কম থাকায় শুনানির জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন রাষ্ট্রপক্ষের ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ট্রাইব্যুনালে শুনানির জন্য মামলার তালিকা দীর্ঘ না হলেও রায়ের জন্য অপেক্ষমাণের তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকা বাড়লেও ১০ মাসের অধিক সময় ধরে রায় শূন্য রয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অর্থাৎ ২০১৪ সালে ট্রাইব্যুনাল থেকে কোনো রায় ঘোষণা করা হয়নি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সর্বশেষ গত বছরের ৩ নভেম্বর প্রবাসী জামায়াত নেতা চৌধুরী মঈনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামানের ফাঁসির রায় হয়। এরপর আর কোনো রায় হয়নি। বর্তমানে আপিল বিভাগে একটি ও ট্রাইব্যুনালে ছয়টি মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চূড়ান্ত শুনানি শেষে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা আছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেন ও ফরিদপুরের পলাতক বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকনের মামলা এবং ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী ও জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ কায়সারের মামলা।
মামলা সংকটের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী ও রানাদাস গুপ্তের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ নতুন বার্তাকে বলেন, “ট্রাইব্যুনালের রায়ের অপেক্ষায় আমরা উদগ্রীব হয়ে আছি। কেন এত দেরি হচ্ছে আমরা বুঝতে পারছি না।”
তিনি বলেন, “মামলা সংকটের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে নেই। তদন্ত সংস্থা তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিলে আমরা তা দেখে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করি। এরপর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।”
সংগঠন হিসেবে জামায়াতের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি কিছুই জানি না। শুনেছি আইন সংশোধন হচ্ছে। আইন সংশোধন হলে নতুন করে আবার তদন্তের প্রয়োজন হতে পারে। তারপর কী হবে এখন তা বলতে পারছি না।”
তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সদস্য সানাউল হক নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “ঈদের আগে নতুন কোনো মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হচ্ছে না।” তবে ঈদের পর তিন/চারটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে তিনি জানান।
নতুন আরো বেশ কিছু মামলার তদন্ত কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এসব মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হলেই ট্রাইব্যুনালের মামলার সংখ্যা বেড়ে যাবে। “
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫২:৫২ ৩৪২ বার পঠিত