বঙ্গনিউজ-ঢাকা: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা আজকের হরতাল প্রতিরোধে মহাজোটেআওয়ামী লীগ। গতকাল বিকেলে মহাজোটের জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ, তরিকত ফেডারেশন, ন্যাপ, গণতন্ত্রী পার্টির নেতাদের সাথে আলাপ হয়। জোট নেতারা মনে করেন বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল গণবিরোধী। জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। জনস্বার্থমূলক কোনো কর্মসূচি তারা পালন করে না। ফলে এমনিতেই জনগণ হরতাল প্রত্যাখ্যান করবে। এখানে প্রতিরোধ করতে পাল্টা কর্মসূচি দেয়ার কোনো মানেই হয় না। পাল্টা কর্মসূচি দিলে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে জনগণের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।
জামায়াতের ডাকা গত দুই দিনের হরতালের প্রতিবাদেও মহাজোটের শরিক দলগুলোকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। তবে জোটের শরিক দলগুলো মাঠে না থাকলেও আওয়ামী লীগ একাই হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করবে। এ জন্য মহানগর আওয়ামী লীগ হরতাল প্রতিরোধ করতে ইতোমধ্যে নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
জামায়াতের ডাকা হরতাল প্রতিরোধ করতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী সমর্থক বেশ কয়েকটি সংগঠন হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক নয়া দিগন্তকে জানান, এ হরতাল গণবিরোধী। ২০ দলের ডাকা হরতাল জনগণই প্রত্যাখ্যান করবে, এখানে প্রতিরোধ করার কিছুই নেই। তাই হরতালের প্রতিবাদে কোনো কর্মসূচি নেয়া হয়নি।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নয়া দিগন্তকে বলেন, হরতালের পক্ষে বলেন আর বিপক্ষে বলেন কোনোটাতেই আমরা নেই। জনগণের দুর্ভোগ হয় এমন কোনো কর্মসূচিতে আমরা নেই, সহিংস রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না।
ন্যাপের সহসাধারণ সম্পাদক মো: ইসমাইল হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, ২০ দল যে হরতাল ডেকেছে, তা অযৌক্তিক। জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য তারা এ হরতাল ডেকেছে। তিনি বলেন, হরতাল প্রতিরোধে আমরা পাল্টা কর্মসূচির পক্ষে নই। পাল্টা কর্মসূচি দিলে রাজনীতি সহিংসতার দিকে গেলে জনগণের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুর রহমান সেলিম নয়া দিগন্তকে বলেন, ২০ দলের ডাকা হরতাল জনগণের সাথে সম্পৃক্ত নয়। তাদের হরতাল জনগণই প্রত্যাখ্যান করবে। সে ক্ষেত্রে প্রতিহত করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
গতকাল জামায়াতের ডাকা হরতালের প্রতিরোধ করতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, মিরপুর, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁওসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো। সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ একটি হরতালবিরোধী মিছিল বের করে। দুপুরে একই স্থান থেকে যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি হরতালবিরোধী মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড অংশ নেয়। এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মতায় আসতে চায়। অশুভ সব ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
সকালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো: আবু কাউছারের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় প্রেস কাবের সামনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ একটি হরতালবিরোধী সমাবেশ করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সামসুল হক টুকু, কৃষকলীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ বলেন, বিএনপি-জামায়াত যাতে হরতালের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নেতাকর্মীরা অবস্থান করবে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৪:০৮ ৩১১ বার পঠিত