বঙ্গনিউ-জঅ্যান্ড্রয়েডচালিত মোবাইল ডিভাইসের চাহিদা বেশি হওয়ায় বিশ্বব্যাপী এমন অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, যারা শুধু অ্যান্ড্রয়েডচালিত ডিভাইসই সরবরাহ করছে। আর অ্যান্ড্রয়েডচালিত ডিভাইস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে কোরিয়ার প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। তবে সম্প্রতি গুগলের অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনছে স্যামসাং। বর্তমানে স্যামসাং নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম টিজেনের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্যামসাং টিজেনচালিত স্মার্টঘড়ি উন্মোচন করেছে। অ্যান্ড্রয়েড ছাড়াও স্যামসাং সম্প্রতি টিজেনচালিত মোবাইল ডিভাইসগুলোতে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করবে না বলে জানিয়েছে। টিজেনচালিত মোবাইল ডিভাইসগুলোয় স্যামসাং গুগল ম্যাপের পরিবর্তে নকিয়ার হিয়ার ম্যাপস ব্যবহার করবে।
টিজেনচালিত ডিভাইসগুলোর সেবায়ও বড় ধরনের পরিবর্তন আনসে বলে জানিয়েছে স্যামসাং কর্তৃপক্ষ। পরিধানযোগ্য পণ্যের বাজারে প্রথম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টওয়াচ উন্মোচনের ছয় মাসের মাথায় দ্বিতীয় প্রজন্মের ‘গিয়ার এস’ স্মার্টওয়াচ উন্মোচন করেছে স্যামসাং। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমচালিত নতুন গিয়ার এস স্মার্টওয়াচে বিল্ট-ইন থ্রিজি সুবিধা থাকায় স্মার্টফোনের সংযোগ ছাড়াই কল করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। স্যামসাংয়ের নিজস্ব টিজেন অপারেটিং সিস্টেমচালিত নতুন এ ডিভাইসটিতে আছে ২ ইঞ্চি বাঁকানো সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে। এছাড়া একবার চার্জে টানা দু’দিন সচল থাকবে স্যামসাং গিয়ার এস।
গিয়ার এস স্মার্টওয়াচের পাশাপাশি গিয়ার সার্কেল নামে একটি ব্লুটুথ হেডফোনও উন্মোচন করেছে স্যামসাং। স্মার্টফোনের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে গিয়ার সার্কেল দ্বারা কল রিসিভ, গান শোনা এবং ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে স্মার্টফোনের বিভিন্ন ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। আগামী অক্টোবর থেকে স্যামসাং গিয়ার এস এবং গিয়ার সার্কেল আন্তর্জাতিক বাজারে পাওয়া যাবে। তবে ডিভাইস দু’টির মূল্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি স্যামসাং।
স্যামসাং আগামীতে টিজেনচালিত এ ধরনের আরো একাধিক পণ্য আনার পরিকল্পনা করছে। মূলত অ্যান্ড্রয়েডের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতেই স্যামসাং এ পদপে নিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ দিকে মাইক্রোসফট, গুগল ও অ্যাপলের মতো শীর্ষ মোবাইল ডিভাইস নির্মাতাদের রয়েছে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম। এ দিক দিয়ে পিছিয়ে ছিল স্যামসাং। ধারণা করা হচ্ছে, টিজেনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি তাদের অপারেটিং সিস্টেমের শূন্য স্থানটিও পূরণের চেষ্টা চলছে। অ্যান্ড্রয়েডের নির্মাতা গুগল হলেও এ অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে বাজার থেকে বেশির ভাগ অর্থই সংগ্রহ করছে স্যামসাং। কিন্তু তুলনামূলক কম দামের ডিভাইসের বাজার দিন দিন তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ কারণে স্যামসাংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় হ্রাসের চেষ্টা করছে। আর অ্যান্ড্রয়েডচালিত ডিভাইস সরবরাহের কারণে স্যামসাংকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। কিন্তু টিজেনচালিত ডিভাইসগুলোর েেত্র স্যামসাংকে অপারেটিং সিস্টেমের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
রাশিয়া, চীন ও ভারতের মতো বড় বাজারগুলোয় প্রতিষ্ঠানটি টিজেনচালিত ডিভাইস আগে ছাড়বে। রাশিয়া, ভারত ও চীনকেই মোবাইল ডিভাইসের জন্য সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই বাজারগুলোয় স্যামসাং তাদের সুনাম কাজে লাগিয়ে টিজেনের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১২:২৭ ৩৭৩ বার পঠিত