বঙ্গ-নিউজঃ মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীর উত্তমের লেখা ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ বইটিতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অসত্য ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য তুলে ধরায় আজ জাতীয় সংসদে বইটি বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।
মাগরিবের বিরতির পর সংসদের বৈঠকে সরকারি দলের আবুল কালাম আজাদ পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বিষয়টি সম্পর্কে সংসদকে অবহিত করলে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সরকারি দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশিদ ও জাসদের মঈনউদ্দিন খান বাদল এর ওপর বক্তৃতা করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বইটিতে এসব তথ্য মুক্তিযুদ্ধকে হেয়, জাতিকে বিভ্রান্ত ও বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার উদ্দেশ্যেই তুলে ধরা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ‘জয় বাংলা’ বলেই তাঁর ভাষণ শেষ করেন। কিন্তু এ কে খন্দকার বইটিতে উল্লেখ করেছেন বঙ্গবন্ধু জয় পাকিস্তান বলেছেন। এ তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্ভট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, বিশ্বে বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যার রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে কোন মতবিরোধ নেই।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ কে খন্দকার তার বইতে বলেছেন- তিনি ১৯৫১-৬৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে সামরিক কর্মকর্তা অবস্থানকালীন পাকিস্তানীদের কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পেয়েছেন, অনেকে তার ভাল বন্ধুও ছিলেন। এ কে খন্দকার জানান, ১৯৬৫ থেকে ৬৯ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটেছিল যেমন ৬ দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এসব সম্পর্কে তিনি জানেন না। কিন্তু তার এসব কথা অসত্য।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ কে খন্দকার তার বইতে লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধের কোন প্রস্তুতি ছিল না। কিন্তু তার কাছে আমার জিজ্ঞাসা তাহলে হাওয়ার মধ্য দিয়ে কি দেশ স্বাধীন হয়ে গেল?
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধুÑ এটা ঐতিহাসিক সত্য। এ ব্যাপারে কে কি লিখল তাতে বাঙালি জাতির কিছু যায় আসে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সকল দিক-নির্দেশনা ছিল। আর সেজন্য এ ভাষণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু ভাষণ শেষে জয়বাংলা বলেছিলেন, জয় পাকিস্তান বলেননি। এ কে খন্দকার তার বইতে এসব বলে ইতিহাস বিকৃতি করছেন, সংবিধানের অবমাননা করছেন এবং বঙ্গবন্ধুকেও অবমাননা করছেন।
তিনি বলেন, ‘এ কে খন্দকার জাতিকে বিভ্রান্ত করতে কোন এজেন্সির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এ বই লিখেছেন বলে আমার সন্দেহ হয়।’ তিনি এ বই বাতিল করার দাবি জানান।
আমির হোসেন আমু বলেন, যারা বলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ছিলো না তারা জাতির অস্তিত্ব ও দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা, আর জাতিকে আঘাত করলে ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে নয় মূল আঘাত করা হয় দেশের ওপর। যারা দেশকে অতীতেও মেনে নিতে পারেননি। তারা আজও ষড়যন্ত্রেও লিপ্ত রয়েছেন।
ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, যারা মোশতাক সরকারকে সমর্থন করেছিল তারা কি বলে বা না বলে তাতে কিছু যায় আসে না। বঙ্গবন্ধু মানেই জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩১:৫৭ ৩৫৯ বার পঠিত