ডেস্ক রিপোর্টঃগণমাধ্যম যাতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে, সে জন্য জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
আজ বুধবার সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির সাংসদ নুরুল ইসলামের এ-সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রণয়নের জন্য ২০১২ সালের ১ নভেম্বর ১৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি, আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রতিনিধিরা ছিলেন। তাঁরা বিবিসিসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর নীতিমালা পর্যালোচনা করে খসড়া চূড়ান্ত করেন। ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বরে খসড়া নীতিমালা সাধারণ মানুষের মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
‘এতে অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (এটকো) আর্টিকেল-১৯, টিআইবি, এনজিও নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনস, কম্পিউটার সমিতি, পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতামত পাওয়া যায়। পরে এ সংক্রান্ত কর্মশালায়ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতেই মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে। পরে মন্ত্রীসভা গত ৪ আগস্ট সামান্য সংশোধনীসহ খসড়াটি অনুমোদন করে। কাজেই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
‘এখন সমালোচকেরা যেসব প্রশ্ন উত্থাপন করছেন, খসড়া চূড়ান্ত করার আগে তাঁরা তা উত্থাপন করেননি। কাজেই আমরা আশা করি, এই নীতিমালা জারির ফলে গণমাধ্যম অধিক দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। নীতিমালার ধারাবাহিকতায় একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। নীতিমালায় কোনো অসম্পূর্ণতা থাকলে আইনের মাধ্যমে তা পূরণ করা হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেওয়া হবে।’
পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন বন্ধ করে দেয় চারদলীয় জোট সরকার
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তি হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে এর বাস্তবায়ন বন্ধ করে দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে একজন উপজাতিকে নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও তারা একজন অউপজাতীয়কে নিয়োগ দেয়। ২০০১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠিত হলেও বিএনপি-জামায়াতের সময় এ কমিশন অকার্যকর ছিল। যে কারণে সেখানে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসে ঘাটতি তৈরি হয়।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, শান্তিচুক্তিতে ৭৮টি ধারা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি বাস্তবায়িত, ১৫টি আংশিক বাস্তবায়িত এবং নয়টি বাস্তবায়নাধীন।
সমুদ্রে অধিকার সুরক্ষায় পরিকল্পনা হচ্ছে
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটার বিরোধপূর্ণ সমুদ্র এলাকার মধ্যে আন্তর্জাতিক সালিসি ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশকে ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা দিয়েছে। এখন সমুদ্রে মত্স্য শিকার, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, সমুদ্রসীমা রক্ষাসহ সব অধিকার সুরক্ষায় কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ট্যানারি শিল্প: ১৫৫ জনকে প্লট বরাদ্দ
কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাজারীবাগের ট্যানারিশিল্প সাভারে স্থানান্তরের জন্য ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সেখানে ২০৫টি প্লট ১৫৫ জন উদ্যোক্তাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪৯ জন তাদের লে-আউট পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য বিসিকে জমা দিয়েছে। তার মধ্যে দুটি সংশোধনের জন্য ফেরত পাঠিয়ে বাকিগুলো অনুমোদন করা হয়েছে।
তাঁতবোর্ডের ১৫ কোটি টাকার প্রকল্প
মুহিবুর রহমানের (মানিক) প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে মসলিন কাপড় তৈরি হয় না। তবে ঢাকার সোনারগাঁও, ডেমরা, রূপসী, তারাব, মিরপুর ও টাঙ্গাইলে মসলিনের মতো কাপড় তৈরি হচ্ছে। এই শিল্প রক্ষার জন্য তাঁতবোর্ড ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
প্রশ্নপর্ব শুরুর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৭:০১ ৩৯৫ বার পঠিত