বঙ্গনিউজ-বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং-এর টাকা ছিনতাইয়ের পর এর সাথে জড়িত মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
অনেক এজেন্টদের কাছ থেকে সম্প্রতি বড় অংকের টাকা ছিনতাইয়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবারও ব্রাহ্মনবাড়িয়াতে বেসরকারি মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের একজন এজেন্টের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। “আমরা আমাদের এজেন্ট এবং ডিষ্ট্রিবিউটরদের টাকা পরিবহনের ক্ষেত্রে সতকর্তা অবলম্বন করতে বলেছি। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিতে বলেছি।”
জাহেদুল ইসলাম, মুখপাত্র, বিকাশ
বাংলাদেশে দ্রুত টাকা লেনদেন করার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং এখন অনেকেই পছন্দ করেন। মূলত: নিম্নবিত্ত মানুষই মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা নেন বেশি।
বাংলাদেশে ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে মোবাইল ব্যাংকিং-এ লেনদেন হয়েছে প্রায় ১১০০০ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই অংক দ্রুত আরও বাড়বে।
কিন্তু টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা এজেন্টদের আতংকিত করে তুলছে। মাঠ পর্যায়ে এজেন্টরাই এই ব্যবসার অন্যতম চাবিকাঠি।
সংবাদ বিশ্লেষনে দেখা যায়, সম্প্রতি যেসব এজেন্টের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে টাকার নূন্যতম অংক প্রায় ১০ লাখ টাকা। কয়েকটি ঘটনাতে সম্প্রতি এজেন্টদের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা ছিনতাই হয়েছে। অনেক এজেন্ট মনে করেন, বড় শহরগুলোতে তাদের কাজটি আরো বেশি ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং-এর প্রসার দ্রুত বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং-এর প্রসার দ্রুত বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে গবেষণা করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আশা’র শিক্ষক শাহনুর ইসলাম। তিনি মনে করেন, মোট লেনদেনের তুলনায় দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেক কম হলেও ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলোকে ছোট করে দেখার কোন কারণ নেই।
তিনি বলেন, ”এটা অবশ্যই বড় করে দেখতে হবে। তা না হলে এজেন্টরা তাদের পুঁজি হারিয়ে ফেলবে। এখানে এজেন্ট বলতে যাদের বোঝানো হচ্ছে তারা সবাই সাধারণ ব্যবসায়ী।”
বাংলাদেশে ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা চার লাখের বেশি। মোবাইল ব্যাংকিং-এ নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখের মতো। এসব ছিনতাইয়ের ঘটনা সাধারণ গ্রাহকদের ওপর কোন প্রভাব না পড়লেও সার্বিক ব্যবসার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করছে।
যে ক’টি কোম্পানি গ্রাহকদের মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা দিচ্ছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ। এর মুখপাত্র জাহেদুল ইসলাম বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ”আমরা আমাদের এজেন্ট এবং ডিষ্ট্রিবিউটরদের টাকা পরিবহনের ক্ষেত্রে সতকর্তা অবলম্বন করতে বলেছি। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিতে বলেছি।”
ছিনতাইয়ের ঘটনা কিভাবে রোধ করা যায় সেজন্য তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কেউ বড় অংকের টাকা বহন করার ক্ষেত্রে পুলিশকে জানালে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হয়। তবে ছিনতাই হওয়ার পর সে টাকা কতটা উদ্ধার করা সম্ভব হয় সে ব্যাপারে কোন পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
সুত্র:বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৩:৩৮ ৩৫৪ বার পঠিত