অর্থনীতি শক্তিশালী করতে স্থানীয় বাজার গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

Home Page » জাতীয় » অর্থনীতি শক্তিশালী করতে স্থানীয় বাজার গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০১৪



 

ঢাকা, ২৮ আগস্ট ২০১৪ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করতে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশী পণ্যের স্থানীয় বাজার গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল রফতানি নিয়ে চিন্তা করা যথাযথ হবে না। আমাদের স্থানীয় বাজার সৃষ্টি এবং জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর নজর দিতে হবে। এটি হচ্ছে দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী হবে না।
সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়লে স্থানীয় বাজার গড়ে উঠবে এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও অনেক বেড়েছে। বিগত ৫ বছরে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলশ্রুতিতে বর্তমান মাথাপিছু আয় ১ হাজার ১৯০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে তিনি এ কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণকালে এ কথা বলেন। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান সিকদার, প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উৎপাদন ও ভোক্তার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমদানি রফতানি নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ। এটা মনে রেখেই দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রেখে ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মূল্য স্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মুক্তবাজার অর্থনীতির নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং পদক্ষেপ নিতে হবে আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার নিরিখে।
এর মধ্যে জনগণের চাহিদা, বিশ্ব বাজারে এবং বিদেশে চাহিদার ভিত্তিতে পণ্যে উৎপাদনের বিষয়ে বিশেষভাবে বিবেচনায় নিতে হবে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাশ্রয়ী মূল্যে জনগণের কাছে পণ্য ও সেবা পৌঁছে দিতে ১৯৭২ সালে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, টিসিবি কার্যকরভাবে পরিচালিত না হলে বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। অবশ্য এরপরও অনেক বড় বড় দাতা রয়েছেন- যারা বাস্তবতা না বুঝে প্রায়ই অনেক উপদেশ দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে নিত্যপণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালে রাখতে হলে কিছু পণ্য নিজের এখতিয়ারে রাখতে হবে। বাজারের ওপর এ ধরনের নিয়ন্ত্রণের প্রভাব রয়েছে।
ভেজাল খাদ্যের পাশাপাশি ফরমালিনমুক্ত খাবারের বিক্রি ও ব্যবহার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিএসটিআই’র মানোয়ন্নন করেছে। এ সঙ্গে ভেজাল খাদ্য বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে ফরমালিন সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেনতা সৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে।
রফতানি খাতে সরকারের সাফল্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ১৫ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় গত অর্থবছরে রফতানি আয় ৯৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ দশমিক ১৭ শতাংশ হয়েছে। এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
ব্যবসা-বাণিজ্যকে একটি দেশের অর্থনীতির রক্তের যোগানদাতা হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য করার সময় দেশের সামগ্রিক স্বার্থ ও উন্নয়ন বিবেচনায় নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে চা’র পাশাপাশি মৎস্য, মাংস ও শাক-সবজির ব্যাপক চাহিদার কথা উল্লেখ করে বলেন, এ সকল পণ্যের রফতানি বৃদ্ধি করা গেলে দেশে শুধু বৈদেশিক মুদ্রার আয় হবে না, দেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।
শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বাজারে আরো বাংলাশেী পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের অনুমতি প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করে এক্ষেত্রে একটি দেশের ভূমিকার সমালোচনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতি সম্পর্কে দেশটি সবসময়ে ভোকাল অথচ তাদের নিজস্ব মার্কেটে কয়েকটি দেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা দিচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে মধ্যপ্রাচ্য ও উপ-সাগরীয় দেশসমূহে আমাদের বাজার খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সীমান্ত বাজারের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এতে বাংলাদেশ অধিক লাভবান হবে।
শেখ হাসিনা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে নন-ট্যারিফ বাঁধা দূর করতে পদক্ষেপ নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেন।
শেখ হাসিনা কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা ও বৃদ্ধি করার অংশ হিসেবে বলেন, বিদেশে বাংলাদেশী মিশনসমূহকে আরো সক্রিয় হতে হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
দেশে ভোজ্য তেলের ব্যাপক ঘাটতি থাকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দেশে তেলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ঘাটতি কমিয়ে এনে আমদানি-নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে ভোক্তা অধিকার অধিদফতর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অধিদফতরের কর্মকা- ইতোমধ্যেই জেলা পর্যায়ে সম্প্রসারিত হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ভোক্তা অধিকার কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত ৫ বছরে তাঁর সরকার গৃহীত পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার ২০২১ সালের আগে দেশকে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগে দেশকে উন্নত দেশ বানাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৯:৩১   ৩১৯ বার পঠিত  




জাতীয়’র আরও খবর


সালাম, আমান, রিজভী, খোকন, শিমুল ও এ্যানিসহ গ্রেফতার শতাধিক
ভারতকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয় নিশ্চিত
 নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ,নিহত ১
বিয়েবর্হিভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ: প্রতিবাদে বিক্ষােভ ইন্দোনেশিয়ায়
আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কোয়ার্টারে ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি
ব্যাংকে টাকা নিয়ে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির লটারি ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর
২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
সউদী আরব তৈরি করবে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর

আর্কাইভ