হাতিরঝিলে চালু হচ্ছে ওয়াটার ট্যাক্সি ও ওয়াটার ট্যুরিস্ট বাস। রামপুরা ও মগবাজারে দুটি ট্যাক্সি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ওয়াটার ট্যাক্সি ও টুরিস্ট বাস কেনার কার্যক্রম। আগামী ডিসেম্বরে এই সার্ভিস উদ্বোধন করা হবে। তখন মগবাজার থেকে রামপুরায় অনায়াসে যাতায়াত করা যাবে। নান্দনিক এই ট্যাক্সি ও বাসভাড়া নিয়ে ঝিলে ভ্রমণও করা যাবে। আর আগামী মাসে চালু হতে যাচ্ছে অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিস। এ জন্য ছয়টি বাস কেনা হচ্ছে। হাতিরঝিলে গণপরিবহনের চাহিদা পূরণ করবে এ বাসগুলো। কেবল ঝিল এলাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ বাস চলবে। নির্ধারিতস্টপেজে দাঁড়ালেই ১৫ মিনিট পর পর বাস পাওয়া যাবে।এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে হাতিরঝিল প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর কাজী শাকিল হোসেন সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মগবাজার থেকে রামপুরা ওয়াটার ট্যাক্সি সার্ভিস শুরু হলেও পরে এ সেবা বাড়ানো হবে। গুলশান অংশে নির্মাণাধীন ব্রিজটির কাজ শেষ হলে ঝিল যুক্ত হবে গুলশান লেকের সঙ্গে। তখন গুলশান পর্যন্ত এ সার্ভিস বাড়ানো হবে। গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে বিদ্যমান সড়কটির ওপর একটি আকর্ষণীয় ব্রিজ করার প্রকল্প নিয়েছে রাজউক। তারা এ প্রকল্পের কাজ শেষ করলে ওয়াটার ট্যাক্সি যাবে বারিধারা কালাচাঁদপুর পর্যন্ত। এই বৃহত্তর নৌ সার্ভিস ঝিল ও লেক এলাকাকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।হাতিরঝিলে চালু হচ্ছে ওয়াটার ট্যাক্সি, ট্যুরিস্ট বাসহাতিরঝিলের জৌলুস বাড়াতে ওয়াটার ট্যাক্সি ও অভ্যন্তরীণ বাস সার্ভিস খুব দ্রুত চালু করা হলেও সৌন্দর্যবর্ধনের কিছু কাজ চলছে খুব ধীরগতিতে। সেসঙ্গে এই ঝিল রক্ষণাবেক্ষণে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই। রক্ষণাবেক্ষণ তহবিলও নেই। এ অবস্থায় হাতিরঝিল রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ম্লান হচ্ছে সৌন্দর্য।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রগতি সরণি দিয়ে আসা যানবাহন বর্তমানে রামপুরা ব্রিজ অতিক্রম করে হাতিরঝিলের রাস্তায় ঢুকতে পারে না। কেবল মালিবাগ রেল ক্রসিংয়ের দিক থেকে রামপুরা টিভি সেন্টারের দিকে আসা যানবাহনগুলো হাতিরঝিলে ঢুকতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে রামপুরা টিভি সেন্টার থেকে একটি ইউ লুপ দিয়ে হাতিরঝিলে যাওয়ার পথ তৈরি করা হচ্ছে। তবে এ কাজ চলছে খুব ঢিমেতালে। আর গুলশান লেকের সঙ্গে হাতিরঝিল যুক্ত করার জন্য গুলশানে শুটিং ক্লাবের পাশে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজও ধীরগতিতে এগোচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর কাজী শাকিল হোসেন বলেন, রামপুরায় নির্মাণাধীন লুপটিতে ওঠার অংশে নির্মাণ-সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে। মাটির নিচে অপরিকল্পিত ইউটিলিটি লাইন থাকায় এ কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে গুলশান ব্রিজের কাজ চলছে ঠিকমতোই। এই ব্রিজের গার্ডারগুলো সাভারে তৈরি করা হচ্ছে। সময়মতো সেখান থেকে এনে লাগিয়ে দেওয়া হবে।তবে গুলশান আড়ংয়ের পাশে নির্মাণাধীন এম্পিথিয়েটারের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এটি নির্মিত হলে থিয়েটার থেকে আলোকরশ্মি বিচ্ছুরিত হবে। সন্ধ্যার নির্মল বাতাসে লেকের ভেতরে বসে উপভোগ করা যাবে রঙিন লেজার শো। থিয়েটার মঞ্চে থাকবে দেড় হাজার দর্শনার্থীর বসার ব্যবস্থা। মঞ্চায়ন হবে নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল না থাকায় বর্তমানে কিছু নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করে ঝিলের দেখভাল করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সড়কবাতি চুরি রোধ করা যাচ্ছে না। মূল্যবান কিছু গাছও মরে যাচ্ছে। অবশ্য ঝিলের নিরাপত্তা বাড়াতে এরই মধ্যে চারপাশে বাউন্ডারি দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন নির্দিষ্ট পথ ছাড়া হাতিরঝিলে ঢোকা যাচ্ছে না।জানতে চাইলে রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী ইমদাদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত ভেটিংয়ের জন্য বুয়েটের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে রয়েছে। দ্রুত এই তহবিল গঠন করার চেষ্টা চলছে। গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩০:০২ ৪০৬ বার পঠিত