বঙ্গ-নিউজঃ তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দৈনিক ইনকিলাবের বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজুর রহমান বুধবার রবিউল্লাহ রবিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
শুননি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম এস এম আশিকুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রবির আইনজীবী জামিনের আবেদন করলেও বিচারক তা নাকচ করে দেন।
এক পুলিশ কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজধানীর আর কে মিশন রোডে ইনকিলাবের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বার্তা সম্পাদককে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইনকিলাবে পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত এআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার মঙ্গলবার ওয়ারি থানায় ওই মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা ও আইসিটি আইন লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়।
এআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদারকে নিয়ে সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইনকিলাব, যাতে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বলা হয়, ‘তিনি পুলিশ বাহিনীতে তৈরি করেছেন অঘোষিত হিন্দু লীগ’।
ইনকিলাবের বার্তা সম্পাদকের পাশাপাশি প্রকাশক ও সম্পাদক, প্রধান প্রতিবেদক, নগর সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককেও আসামি করা হয় ওই মামলায়।
ইনকিলাবের এক সাংবাদিক বলেন, মামলা হওয়ার পর রাতে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা অফিসে এসে প্রথমে কয়েকজনের খোঁজ করেন।
“তারা গত সোমবার ‘প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে একচ্ছত্র অধিপত্য এক পুলিশ কর্মকর্তার’ এবং মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ভারতবিরোধী মনোভাব বিদ্যমান’ শীর্ষক প্রতিবেদন কে লিখেছে, তা জানতে চান। তারা এসব সাংবাদিকের জীবনবৃত্তান্তও চান।”
দিনে অফিস খোলার সময় জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া যাবে বলে ডিবি কর্মকর্তাদের জানানোর পর বার্তা সম্পাদক রবিউল্লাহ রবির সঙ্গে কথা বলেন তারা। যাওয়ার সময় তাকে নিয়েই বের হন।
রিমান্ডের আবেদনে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আজিজুর রহমান বলেন, “আসামিরা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করে পুলিশ বিভাগে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
“পাশাপাশি ‘হিন্দু লীগ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে’- এমন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আসামিরা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার চেষ্টা করেছেন।”
ইনকিলাব ওই প্রতিবেদন তৈরির জন্য কাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং কারা এর পেছনে ইন্ধন দিয়েছে তা জানতে রবিকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
অন্যদিকে এর বিরোধিতা করে রবির আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি, তারা প্রেস কাউন্সিলেও কোনো অভিযোগ করেনি।
“তারা মানহানির মামলা করতে পারত। তা না করে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হলো, যা ঠিক হয়নি।”
সেনাবাহিনী নিয়ে ‘ভিত্তিহীন’ প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে এক মামলায় কয়েক মাস আগেও একবার ইনকিলাব কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ।
ইনকিলাব কর্তৃপক্ষ পরে ওই প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৬:৩২ ৫৫৯ বার পঠিত