ইসরাইল গত বৃহস্পতি বা শুক্রবারের মধ্যে সিরিয়ায় একটি বিমান হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের দুজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সিএনএন। সিএনএন ওই কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গত বৃহস্পতিবার-শুক্রবারের মধ্যে হামলাটি চালানো হয়েছে। তবে ইসরাইলের যুদ্ধবিমানগুলো সিরিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি। সিরিয়ার কোনো রাসায়নিক অস্ত্র ভান্ডার লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়নি বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা। সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময়কালে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান লেবাননের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়েছিল এমন তথ্য সংগ্রহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের জানুয়ারিতে, সিরিয়ার একটি সামরিক বহরে বোমা হামলা চালায় ইসরাইল। আঞ্চলিক নিরাপত্তা সূত্র, সিরিয়ার বিদ্রোহী ও কূটনীতিকদের মতে, হিজবুল্লর উদ্দেশ্যে পাঠানো অস্ত্রের চালান লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়।
তবে খবরটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ওদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, গত বৃহস্পতিবার বানিয়াস বন্দরের কাছে আল বায়দা এলাকায় ৪০ জন ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যা করা হয়। সংস্থাটি জানায়, শাবিহা নামে পরিচিত সরকারি বাহিনী এই হত্যাকান্ডে নেতৃত্ব দেয়। একটি অনলাইন ভিডিওতে সাতটি রক্তমাখা মৃতদেহ দেখা যায়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এ সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেনি। এই হত্যাকে বড় মাপের গণহত্যা উল্লেখ করে বিরোধী দল এর জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন। বিবিসি অনলাইন, রয়টার্স।
সিএনএন’র প্রতিবেদনের উল্লে¬খ করে, হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা সিরিয়ায় ইসরাইলের বিমান হামলার বিষয়ে তেলআবিব সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন। ওদিকে জেরুজালেমে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। তবে ইসরাইল সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, এ ধরনের প্রতিবেদনের বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করবো না। ওয়াশিংটনে ইসরাইলি দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, এসব প্রতিবেদনের বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারি না। কিন্তু আমরা যা বলতে পারি তা হলো, সিরিয়ার ক্ষমতাসীনদের হাত থেকে রাসায়নিক অস্ত্র বা পরিস্থিতি পাল্টে দেয়ার মতো অন্যান্য অস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিশেষ করে লেবাননের হিজবুল্লহর হাতে চলে যাওয়া প্রতিরোধ করতে ইসরাইল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ২০০৬ সালের এক যুদ্ধে হিজবুল্লহ ইসরাইলের সঙ্গে টানা ৩৪ দিন লড়াই করেছিল।
অন্যদিকে, ন্যাশনাল কোয়ালিশন এক বিবৃতিতে বলে, সিরিয়া সংকটে এখনই বিশ্বকে হস্তক্ষেপ করে আসাদ সরকারের ঘৃণ্য অপরাধের অবসান ঘটানো উচিত। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, সিরিয়ায় সঙ্কট উত্তরণে সম্ভাব্য সকল পথই ব্যবহার করা হবে। এর আগে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী চাক হেগেল জানান, ওয়াশিংটন বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়ার বিষয়টি পুনরায় ভাবছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা এক বিবৃতিতে সিরিয়া প্রসঙ্গে তড়িঘড়ি করে কোন সিদ্ধান্তে যাবেন না বলে ইঙ্গিত দেন। তিনি এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সিরিয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান যখন দেশটিতে বিরুদ্ধে বড় কোন অভিযানে গেলেও পরিস্থিতির অবনতি হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫২:০১ ৫১২ বার পঠিত