টুয়েল বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ: ‘নেইমারের বিদায় আমাদের হূদয়ে আঘাত করেছে’, কথাটা ফুটবলের কালোমানিক পেলে’র। কেন বলেছেন, তা ব্যাখ্যা না করলেও চলবে। পেলের কথা যখন উঠল তখন একটু পেছনে তাকানো যাক।বিশ্বকাপ ১৯৬২। ঠিক এভাবে ছিটকে যেতে হয়েছিল কিংবদন্তী পেলেকে। বাকি টুর্নামেন্ট খেলতে পারেননি। তার জায়গায় খেলেছিলেন আমারিন্দো। ফাইনালে গোল করে সেলেকাওদের বিশ্বকাপ জিতিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে খোদ আমারিন্দো কী বলছেন?
‘কাউকে দেখতে পাচ্ছি না নেইমারের বিকল্প হিসেবে৷ একজন কিছুটা কাজ করতে পারত, রবিনহো৷ সে তো টিমেই নেই’, ব্রাজিলের ইএসপিএন রেডিওকে বলেন তিনি।
চিন্তাটা কয়েকশ’ গুণ বেশি হওয়ার কথা দলের কোচ লুই ফেলিপ স্কলারির। হলুদ কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় থিয়াগো সিলভাও খেলতে পারবেন না। তার বিকল্প স্কলারির ভাবাই আছে। বায়ার্ন মিউনিখের প্রথম এগারোর দান্তে খেলবেন তার জায়গায়। কিন্তু নেইমারের অনুপস্থিতিতে খেলার ছক বদলাবেন, না একই ছক থাকবে- সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন!
সেক্ষেত্রে হতে পারে, ছক ৪-২-৩-১ রেখে নেইমারের জায়গায় খেলতে পারেন অস্কার। অথবা, আরও আক্রমণাত্মক কৌশল নিতে পারেন ব্রাজিল কোচ। পাওলিনহো-ফার্নান্দিনহো-গুস্তাভো তিনজনকে মাঝমাঠে রেখে আক্রমণ শানাবেন অস্কার-হাল্ক-ফ্রেড।
আবারও ইতিহাস পুনরাবৃত্তির সামনে দাঁড়িয়ে বিগ ফিল। ২০০২ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন ব্রাজিল দলের কোচ। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে সেমিফাইনাল খেলতে পারেননি মাঝমাঠের অন্যতম কারিগর রোনালদিনহো। সেবার সেমিফাইনালে তুরস্ক এবং ফাইনালে জার্মানি বাধা উতরে দেন রোনালদো-রিভালদো-কার্লোস-কাফুদের মত কিংবদন্তীরা। বলা বাহুল্য, ব্রাজিলের হাতে ওঠে পঞ্চম শিরোপা।
চলতি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ব্রাজিলের সঙ্গে দেখা হচ্ছে জার্মানির। ফরাসিদের বিপক্ষে জয় পেয়ে রীতিমত ফুটছে তারা। তারওপর প্রতিপক্ষ স্কোয়াডে থাকছেন না নেইমার আর সিলভার মতো অপরিহার্য খেলোয়াড়।
পোডলস্কি-ওজিলরা যতই নেইমারের জন্য কাতর হয়ে টুইট করুন, জার্মানরা ২০০২ সালের ফাইনালের শোধ তুলতে দাঁতে দাঁত চেপে আছে।
তবে ব্রাজিলের হয়ে পাল্টা বার্তাও দিয়ে রাখলেন সেই ফাইনালে জার্মান বধের নায়ক রোনালদো, ‘নেইমার নেই বলে জার্মানরা যদি ভাবে, সহজে ব্রাজিলকে হারিয়ে দেবে, তা হলে ভুল করবে৷’
এদিকে টুইটারে ‘নেইমার ঘাতক’ জুনিগাকে (কলম্বিয়া) লক্ষ্য করে উড়ে আসছে একের পর এক উত্তপ্ত মন্তব্য। তাতে সাবেক সব গ্রেটরাও গলা মিলিয়েছেন। ইতালির বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ফ্যাবিও ক্যানাভারোর মতে, ‘এই পরিস্থিতি পুরোপরি এড়ানো যেত৷ যখন ওকে ফাউলটা করা হয়েছে, তখন বল নেইমারের দখলে ছিল না৷ এটা ঠিক হলো না৷ আমার দেখে মনে হয়েছে, ওকে ইচ্ছা করেই মারা হয়েছে৷’
সবই যুক্তিসংগত, কিন্তু ভক্তদের মন তো আর মানতে চাইছে না! ব্যাপারটা তাদের কাছে অনেকটা, ‘সবার সব কথা, কানার দুই চোখের কথার মত’! নেইমারহীন ব্রাজিলে কে করবেন জয়সূচক গোল? ব্রাজিল সেমিফাইনাল জিতলে এ বিস্ময় বালক কি ফিরবেন ফাইনালে? শেষ খবর পাওয়া পর্যন্তু স্কলারি ফাইনাল খেলার আশা প্রকাশ করলেও, চিকিৎসকরা বলছেন অনিশ্চিত। বাকিটা সময় বলবে।
পেলের কথা দিয়ে লেখা শুরু হয়েছিল, পেলের কথা দিয়েই শেষ করা যাক! সারা পৃথিবীর কোটি ভক্তের তিনি আশ্বস্ত করেছেন টুইট করে- ‘১৯৬২ বিশ্বকাপে ঠিক এভাবে আমাকে ছিটকে যেতে হয়েছিল৷ বাকি টুর্নামেন্ট খেলতে পারিনি৷ কিন্তু, ঈশ্বর আমাদের বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছিলেন৷ আমার আশা, এ বারের বিশ্বকাপেও একই জিনিস হবে সেলেকাওদের৷’
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৮:০৮ ৪৪৭ বার পঠিত