কাঞ্চন বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ ভাবমূর্তি রক্ষায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) থেকে সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।সেনা, নৌবাহিনীসহ কয়েকটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত র্যাবকে সরকার রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ করে দলটির নেতারা বলছেন, “দেশ সৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও র্যাবে নিযুক্ত সেনাবাহিনীর মেজররা এখন মানুষের টাকা লুট করছেন। সাতজনকে খুন করে শীতালক্ষ্যায় লাশ ফেলে দিচ্ছে। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য অবিলম্বে সেনাবাহিনীর উচিত র্যা ব থেকে তাদের সব সদস্য প্রত্যাহার করে নেয়া।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও মামলার আদালত স্থানান্তরের প্রতিবাদে এসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা।
রাজধানীর লালবাগের বালুর মাঠে বিএনপি প্রতিবাদ সভা করতে চাইলেও প্রশাসন তাদের অনুমতি দেয়নি। পরে তারা স্থান পরিবর্তন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সভা করে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “জনসমর্থন ছাড়া ক্ষমতা দখল করার পর আওয়ামী লীগের এখনো ভয় কাটেনি। তাই তারা রাজধানীতে বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে বর্তমান অবৈধ সরকার দেশে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।”
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, “খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেয়া হচ্ছে। অথচ তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে কোনো মামলাই হয় না। জনগণ এই ষড়যন্ত্র মানবে না।”
মামলা মোকাদ্দমা করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না বলেও সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
র্যাবের সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “টাকার বিনিময়ে এই বাহিনী মানুষ খুন করছে, যা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। তাই সঙ্গত কারণেই বিএনপি চেয়ারপারসন র্যাব বিলুপ্তির দাবি করেছেন। সরকার রাজনৈতিকভাবে র্যাবকে ব্যবহার করে এটাকে বিতর্কিত বাহিনীতে পরিণত করেছে।”
অবিলম্বে সরকারের কাছে নির্বাচন দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা র্যাবের সমালোচনা করে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তাই সচেতন হোন। সেনা-নৌ ও বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়েছে। তারা বিএনপি আমলে ভালো কাজ করলেও এখন আপনারা রাজনৈতিভাবে ব্যবহার করায় এদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিশেষ করে যে সেনাবাহিনী দেশ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে তারা এখন মানুষ হত্যা করছে, টাকা লুট করছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র।” তিনি অবিলম্বে সেনাবাহিনীকে নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য র্যা বের তাদের যেসব সদস্য আছে তাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে খোকা অবিলম্বে র্যাবের কার্যক্রম স্থগিত করে নারায়ণগঞ্জের ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।
সরকারের উদ্দেশে খোকা বলেন, “যদি গণতান্ত্রিক পথ ও ক্ষমতা বদলের স্বাভাবিক পথ বন্ধ করেন তাহলে আপনাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে উপযুক্ত কর্মসূচি দেয়া হবে।”
এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রদল সভাপতি আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪১:০৬ ৪০০ বার পঠিত