বঙ্গ-নিউজঃ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, যখন ভূমিহীন মানুষের দ্বারে খাদ্য সঠিকভাবে পৌঁছে যাবে এবং প্রান্তিক কৃষকদের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত হবে তখনই আমাদের খাদ্য নিরপত্তা বাস্তবায়ন হবে। তবে প্রান্তিক কৃষকদের পণ্যের ন্যায্য দামের ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থার দিকেও নজর দিতে হবে।
রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মিলনায়তনে খাদ্য নিরাপত্তা এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষদের জন্য জাতীয় বাজেট শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।অক্সফাম ও ঢাবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী কালোকে কালো এবং সাদাকে সাদা বলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিকভাবে ব্যালেন্স থাকতে হবে। রাজনীতির নামে পরিকল্পিতভাবে জ্বালাও-পোড়াও করলে কখনো দেশে শান্তি আসবে না। তাই যারা এসব অপর্কম করছে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ব্যক্তিগত খাত জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে সিংহভাগ ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, ব্যক্তিগত খাত অর্থনীতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এসময় তিনি সরকারি খাতে বড় ধরনের দুর্নীতি রয়েছে উল্লেখ করে তা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সবশেষে তিনি বাজেট নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবি উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগ ও সেন্টার ফর অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ।
মূল প্রবন্ধে কৃষিতে বাজেট বরাদ্দ কমছে উল্লেখ করে তিনি জানান, কৃষি খাতে গত পাঁচ বছরে গড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ১৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। তাই এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন।
এসময় তিনি জানান, কৃষিখাতের উন্নয়নে গত পাঁচ বছরে মোট ২৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সেমিনারে বিভিন্ন সুপারিশও তুলে ধরেন তিনি।
এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সিলেটে যে অনাবাদি জমি রয়েছে সেগুলো কাজে লাগানো যায় কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ বরাদ্দ এবং শষ্য বিমা স্কিম চালু।
কৃষি গবেষণা ও বাম্পার ফলন হলে কৃষক যেন তার ফসল ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে অঞ্চলভেদে উৎপাদিত পণ্যের দিকে নজর দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সেমিনারে বিআইডিএস সিনিয়র রিচার্স ফেলো ড. নাজনিন আহমেদ বলেন, বাজেট নিয়ে অনেক আলোচনা হবে। কেউ বলবে উচ্চাভিলাসী, কেউ বলবে ঠিকই আছে। এগুলোর দিকে নজর না দিয়ে মূল জায়গা রাজস্ব আদায় সঠিক হচ্ছে কী না, সেখানে কোনো দুর্বলতা আছে কী না তা খতিয়ে দেখতে হবে।
রাজস্ব আদায়ের যে সম্ভবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। জনগণের সম্পৃক্ততাও দরকার বাজেটের ক্ষেত্রে। করের সুশাসন বাড়াতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শার্মিন্দ নিলর্মী বলেন, আমাদের কথা আমাদের ভাবতে হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুলনা দিলেই চলবে না। মনিটরিংয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। বরাদ্দ দেওয়া হয় ঠিকই কিন্তু তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ খুবই জরুরি। এসময় তিনি সঠিক পরিকল্পনার গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪৯:৪৫ ৪০১ বার পঠিত