বঙ্গ-নিউজঃ বিগত তিন বছর ধরে শেয়ারবাজারে মন্দাভাব থাকলেও বেশ ইতিবাচক ধারায়ই রয়েছে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। এ খাতের মুনাফার প্রবণতাও বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে। বস্ত্রখাতে বছরের ব্যবধানে তালিকাভূক্ত ২৯ কোম্পানির সম্মেলিত মুনাফা বেড়েছে ১০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এসময়ে নতুন তালিকাভূক্ত হয়েছে তিনটি কোম্পানি। এ তিনটি কোম্পানির মুনাফা (৮৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা) সমন্বয় করলে বছরের ব্যবধানে বস্ত্র খাতের মুনাফা বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯০ কোটি নয় লাখ টাকা। তালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।পুঁজিবাজার বিশেজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্তিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষ থাকলেও পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানির মুনাফায়। অন্যদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাজার ইতিবাচক রয়েছে। এতে বোঝা যায় বাজারের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। বস্ত্র খাতের কোম্পানির মুনাফার বিষয়ে তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা পোশাক খাতে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যায় পোশাক খাতের রপ্তানি আয় বেশ ইতিবাচক রয়েছে। আর রপ্তানি আয় বাড়ায় এ খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফাতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ হিসাব সমাপ্ত বছরে ২৯টি কোম্পানি মুনাফায় রয়েছে। আর লোকসানে রয়েছে দুটি কোম্পানি। এ সময়ে বস্ত্র খাতের তালিকাভূক্ত ৩১ কোম্পানি সম্মেলিতভাবে মুনাফা করেছে ৪৯৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের বছর বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মেলিত মুনাফা করে ৩০৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর কোম্পানি ভালো লভ্যাংশ দিলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বাজারের উপর।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে এনভয় টেক্সটাইল মুনাফা করে ৪৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। যা আগের বছর ছিলো ৪২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। জেনারেশন নেক্সটের মুনাফা ২৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের বছর ছিল ১৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সায়হাম কটনের মুনাফা ২২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সায়হাম টেক্সটাইলের মুনাফা ১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তাল্লু স্পিনিংয়ের মুনাফা দুই গুণ বেড়ে ছয় কোটি তিন লাখ থেকে ১২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সিএমসি কামালের মুনাফা ছয় কোটি নয় লাখ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
এদিকে, আল-হাজ্ব টেক্সটাইলের মুনাফা এক কোটি ২৪ লাখ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা। স্টাইলক্রাফটের মুনাফা হয়েছে এক কোটি আট লাখ টাকা, আগের বছর ছিল এক কোটি ৮৭ লাখ টাকা। রহিম টেক্সটাইলের মুনাফা করেছে এক কোটি ২৭ লাখ টাকা, আগের বছর ছিল ১০ লাখ টাকা। মডার্ন ডাইংয়ের মুনাফা ১২ লাখ টাকা, আগের বছর ছিল ১১ লাখ টাকা। দেশ গার্মেন্টসের মুনাফা ২৪ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ২৯ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ্যাপেক্স স্পিনিং মুনাফা করেছে এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা। মিথুন নিটিং মুনাফা করেছে পাঁচ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, আগের বছর ছিল পাঁচ কোটি নয় লাখ টাকা। আনলিমা ইয়ার্ন ডাইংয়ের মুনাফা দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা, আগের বছর ছিল দুই কোটি ১৩ লাখ টাকা। সাফকো স্পিনিংয়ের মুনাফা দুই কোটি ১৩ লাখ টাকা, আগের বছর ছিল এক কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৯:৪৭ ৩৮৩ বার পঠিত