তমালসাহাস্টাফরিপোর্টারসুসঙ্গদুর্গাপুর(নেত্রকোনা)
জেলার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর পৌরসভায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকৌঃ এ বি এম শরীফুল আলম লাঞ্চিত হওয়ায় দুর্গাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী হয়েছে।
প্রকৌশলী এ,বি,এম শরীফুল আলম এর নিকট জিডি এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পৌর সভায় সুনামের সহিত চাকুরী করে আসছি। এখানে এসেছি প্রায় ৮ মাস হল। আমি শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ। এখানে এসে চিত্তবিনোদন ভাতার বিষয়ে মেয়র মহোদয়,সচিব বিজয় কুমার দত্ত ও হিসাব রক্ষক এর নিকট কথা বললে উনারা আমাকে আশ্বাস দিচ্ছেন এবং খুব দ্রুতই চিত্তবিনোদন ভাতা দিয়ে দিবেন বলে আমাকে আসার পর থেকেই আশ্বাস দিয়ে এসছেন কিন্তু কার্যতঃ পাই নি। শুধু তাই নয়, আমার আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোন প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকা বা গ্র্যাচুইটির টাকা জমা না দিয়ে আমাকে হিসাব রক্ষক বলছেন স্যার ওগুলো জমা হয়ে গেছে, কিন্তু জমার স্লিপ আমি দেখতে চাইলে স্যার দিচ্ছি দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন করছে। অপর দিকে সচিব বিজয় কুমার দত্ত বিভিন্ন ঠিকাদারী লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য আমার নিকট সময় সময় নিয়ে আসেন এবং অনুরোধ করেন সবঠিক আছে মেয়র স্যার বলেছেন দস্তখত দিয়ে দিন। আমি বিশ্বাস করে এরকম অনুরোধ ২ বার রক্ষা করেছি। পরে যখন আমার দায়বদ্ধতা থেকে রেজিষ্টার খাতা এবং সরকারী বিধি অনুযায়ী ব্যাংক এর চালান দেখতে চেয়েছি তখন কোন কিছুই পাই নি তারপর আমি নিজে রেজিষ্টার বানিয়ে দিয়েছি এবং বলেছি এভাবেতো কোন অফিস চলতে পারে না। পৌর সভার দুটো মটর সাইকেল। একটির চাবি আমার নিকট অন্যান্যরাও পৌরসভার প্রয়োজনে ব্যবহার করে আসছে যার আনুষাঙ্গিক খরচ ব্যাপক এ ব্যাপারেও কিছু বললে সচিব ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এমতাবস্তায় মেয়র সাহেবের নিকট বিষয়টি জনালে তিনি মনোযোগ দিয়ে সবকিছু শুনেন এবং এক পর্যায়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন মেয়র সাহেব। সেই সময় দৈনিক চুক্তি ভিত্তিক ঝাড়-দার মোঃ ইউনুছ ,সচিব এবং হিসাব রক্ষক আমাকে মারতে উদ্যত হয় এবং মারেনও বটে। নিরাপত্তার স্বার্থে ২৮ এপ্রিল আমি দ্রুত আমার রুম তালাবদ্ধ করে চলে আসি পরের দিন সকালে আমি যথরীতি অফিসে পৌঁছলে আমার রুমে তালার উপর তালা লাগানো দেখে দাড়ালে সচিব এবং হিসাব রক্ষক আমার চাবি চান তখন আমি বলি আমাকে লিখিত দিয়ে চাবি রেখে দেন, কিন্তু তারা লিখিত দিয়ে চাবি নিবেন না জানালে আামি অফিসের নিরাপত্তার স্বার্থে চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আমি চলে আসি। তখন পর্যন্ত মেয়র সাহেব অফিসে আসেন নাই। এর পর আমি আমার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসনের শরনাপন্ন হয়ে ৩০ এপ্রিল ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে দুটি সাধারণ ডাইরী করি। যাহার নং ১০৯৭।
প্রকৌশলী আরো জানান আমি ইতিমধ্যে এ বিষয়গুলো আমার মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগযোগ অব্যাহত রেখেছি, এবং স্থানীয় ভাবে দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছি বিষয়টি দেখার জন্য। এ ছাড়াও পৌরসভার নানা অনিয়ম রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার সাথে সম্পৃক্ত একাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে বিভিন্ন তারিখে কোন কারন ছাড়াই মেয়র সাহেব তার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে সোনালী ব্যাংক, দুর্গাপুর শাখা কারেন্ট একাউন্ট নং ৯৯৩ থেকে ১৮/০২/১৪ ইং তারিখে ২,৫৯,৬৩৮/- ও ২,৪৭,৫৯০/- টাকা উত্তোলন করেছেন ২ জন কাউন্সিলরের নামে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন জায়গায় ঝাড়-দার ইউনুছ পৌর মেয়র সাহেবের মোটর সাইকেল এর ড়্রাইভার এবং নিজেকে মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দেন । মেয়র সাহেবের বাসার কাজের মেয়ে কেয়া বেগম পৌরসভার মাষ্টার রোলের একজন কর্মচারী, এরকম ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করা কতটা বিধি সম্মত তা জনমনে প্রশ্ন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন কাউন্সিলরদের নামে সম্প্রতি ৯০ হাজার, ৩৩,৩২৫ টাকা ,স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের খেয়া ঘাটের ইজারা দরপত্র না দেওয়ার জন্য বেশকিছুদিন পূর্বে চিঠি পাঠালেও চিঠির উত্তর না দিয়ে প্রায় ৮০ হাজার টাকা পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে উঠিয়ে নিয়ে দরপত্র খরচ দেখিয়েছেন,অথচ এ কাজগুলো করতে মাত্র খরচ হয়েছে ৩/৪ হাজার টাকা,তাছাড়া বিভিন্ন ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু করার জন্য তহবিল থেকে ১,৫০,০০০/- টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অপরদিকে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে পৌর সভার বিভিন্ন ট্যাক্স।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র শ,ম জয়নাল আবেদীন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সচিব বিজয় কুমার দত্ত ও প্রকৌশলী এবিএম শরীফুল আলম চিত্তবিনোদন ভাতা ও পৌরসভার একটি মোটর সাইকেল নিয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনাগুলো ঘটিয়ে আসছে প্রকৌশলী সাহেবের আচরনগত সমস্যা আছে যার কারনেই এগুলো ঘটছে। জিডির বিষয় আমি কিছু জানিনা। আপনারা সত্য বিষয়টা লেখেন আমার কোন আপত্তি নেই। তবে বিষয়টি সমাধান হওয়া জরুরী বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০১:৫৭ ৪২৪ বার পঠিত