ডেস্করিপোর্টঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি যা বলেন, করেন তার উল্টো। সাধারণ মানুষ শান্তিতে থাকলে তিনি অশান্তিতে ভোগেন। দেশের অগ্রগতি রোধে খালেদা জিয়া আমেরিকার কাছে নালিশ করেছেন, বিদেশী পত্রিকায় আর্টিকেল লিখেছেন জিএসপি সুবিধা বন্ধ করার জন্য। খালেদা জিয়া বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিয়ে নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নালিশ করে তিনি বালিশ পেয়েছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগন তাকে ভাঙ্গা জুতার বাড়ি দিয়েছে। খালেদা জিয়া নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছেন তার খেসারত বাংলার মানুষ দেবে না।গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি শুকুর মাহমুদের সভাপতিত্বে জনসভায় আরো বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, সিমিন হোসেন রিমি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমত উল্লা খান প্রমুখ।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে অনেক কলকারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল। বেকার হয়েছিল লাখ লাখ শ্রমিক। অনেকে ন্যায্য মজুরি পায়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে কলকারখানাগুলো চালু করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ে, মানুষ শান্তিতে খেয়ে পরে বাঁচতে পারে। সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে। বিদেশিদের কাছে খালেদা জিয়া নালিশ করে বালিশ পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগকে জনগনের সেবক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বতর্মান সরকার শ্রমিকদের বেতন ভাতা বাড়িয়েছে, তাদের বেতন ন্যূনতম ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নে তাদের বেতন আরো বাড়ানো হবে।
যে বিদেশী প্রভুদের কথায় তিনি নির্বাচন বয়কট করেছেন, এখন তিনি তাদের কাছে ফিরে যান। বিএনপি হত্যা, ক্লু আর চোরাগোপ্তা হামলার রাজনীতি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে যত চোরা গোপ্তা হামলা ও খুনের ঘটনা ঘটেছে তার জন্য বিএনপি দায়ী। এ ব্যাপারে তিনি জনগনকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস আর দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছিল। বর্তমান সরকারের পদক্ষেপে দেশের ভাবমূর্তি ফিরে এসেছে।
শেখ হাসিনা তার শ্রমিকদের উন্নয়নে তার সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, শ্রমিকদের কল্যানে তাদের চাকুরির সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। যুবকদের জন্য বিনা জামানতে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্রমিকদের আবাসনে সরকার টঙ্গীতে হোস্টেল ও ডরমেটরি নির্মাণ করবে। তাদের বেতন আরো বাড়ানো হবে। বস্তিবাসী যারা গ্রামে ফিরে যেতে চান তাদের জন্য গৃহের ব্যবস্থা করা হবে। বিএনপি সরকারের আমলে শ্রমজীবী মানুষ যে আয় করত তা দিয়ে দুই কেজি চাল কেনা যেত না, বর্তমানে তারা এখন ১০ কেজি চাল কিনতে পারছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার কারণে বাংলাদেশ এখন উন্নয়ণের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকার গৃহিত নানা উন্নয়ণ প্রকল্পের ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের কারণে দেশী বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে। বর্তমানে বিদেশ থেকে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে। ৭টি বিভাগে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। দারিদ্রতা হ্রাস পেয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তায় দু:স্থ ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেয়া হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকার কাজ করছে। এসময় তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি ও তাদের দুসররা যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান ।
এর আগে দুপুর থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে আসতে শুরু করেন। বিকেলের মধ্যে পুরো মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী সমাবেশ স্থলে পৌঁছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৫:৫৯ ৫১৩ বার পঠিত