ডেস্করিপোর্টঃপশ্চিমবঙ্গের তিন জেলায় চার আসনের মোটামোটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। রাজ্যের পাঁচ পর্বের নির্বাচনের এ দিন ছিল প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভোট ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন। প্রায় ১২০ কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের ২৫ হাজার সদস্য ভোটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। সে কারেণই প্রায় সহিংসতাহীন নির্বাচন অনুণ্ঠিত হল বলে মনে করা হচ্ছে।এদিন পাবর্ত্য দার্জিলিং এবং উত্তরবঙ্গের কোচবিহার এবং জলাপাইগুড়ি আলীপুর দুয়ারে ভোট নেওয়া হয়। এই রিপোর্ট লেখার সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ হারে ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। চার আসনের ৬০ লাখ ৩৩ হাজার ৩১০ জন ভোটার ৪৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভাগ্য নির্ধারণ করলেন। আগামী ১৬ মে এদের ভাগ্যের পরিণতি জানা যাবে।
শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়া নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। যদিও শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ উঠেছে এই প্রথম পর্ব থেকে। তবে তৃণমূল এইসব অভিযোগ আমলে আনতে রাজি নয়।
উত্তরবঙ্গের পর এবার সবাই তাকিয়ে রাজ্যের দ্বিতীয় দফার ভোট ২৪ এপ্রিলের দিকে। ওই দিন উত্তরবঙ্গের মালাদ উত্তর, মালা দক্ষিণ, জঙ্গিপুর, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মুর্শিদাবাদ আসনে ভোট হবে। আজকের ভোটকেন্দ্রগুলো বামদের একচ্ছত্র ঘাঁটি হলে দ্বিতীয় দফার ভোটের অঞ্চলগুলো কংগ্রেসের দুর্গ বলেই মনে করা হয়। সে কারণে ২১ তারিখ ২২ তারিখ দুই দিন কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী ওই এলাকাগুলোতেই নির্বাচনী প্রচারণা চলাবেন।
এদিকে সকাল ৭টায় ভোট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জলপাইগুড়ির কয়েকটি বুথে ইভিএম মেশিন বিকল হয়ে যাওয়ায় কিছু সময় দেরিতে ভোট শুরু হয়। ওদিকে কোচবিহারের দিনহাটা এবং আলীপুর দুয়ারের ডুয়ার্সে নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোটারদের লম্বাই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। জলপাইগুড়িতে গরমে বেশ কয়েকজন ভোটার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
দার্জিলিংয়ের তৃণমূলের সেলিব্রেটি প্রার্থী জাতীয় ফুটলবার বাইচুং ভুটিয়া যদিও দার্জিলিংয়ের ভোটার নন। সিকিমের ভোটার তিনি। তাই তিনি ভোট দেননি পাহাড়ে নিজের কেন্দ্রে। তবে পাবর্ত্য অঞ্চলকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনরত গোর্খ্যা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন সকালে। উল্টো দিকে পাহাড়ের একচ্ছত্র নেতা বলে পরিচিত জেএনএলএফের প্রধান সুভাষ ঘিসিং সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোট দিতে যাননি। একই ভাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও ভোট দেন দুপুরের আগে।
কোচবিহারের চারটি বিধানসভা এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস ছাপ্পা ভোট দিয়ে রিগিং করেছে এমন অভিযোগ তুলে বামফ্রন্টের প্রার্থী দীপক কুমার রায় এবং ফরওয়াডর্বব্লকের শীর্ষ নেতা উদয়ন গুহ অনশনে বসেন। দুপুরের জেলা শাসক মোহন গান্ধীর কার্যালয়ের সামনে এই অনশন চলে। জেলাশাসক বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও দীপক রায় বলেন, মাথাভাঙা, শিতলকুচি, কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভায় প্রায় সব বুথ দখল করে ভোট দিয়েছে তৃণমূল। যদিও যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথের ভেতর বইরে অবস্থান করছেন সেখানে কোনো দলের পক্ষেই জাল ভোট দেওয়ার সুযোগ হবে না বলে দাবি করেন তৃণমূলের উত্তরবঙ্গে উন্নয়ন বিষয়কমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি আরো বলেন, আসলে ওদের তো ভোটের এজেন্টেরই সংকট। মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হারের আগেই এসব বলে মিডিয়ায় প্রচার চাইছেন বাম নেতৃত্ব।
এদিকে জলাপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী বিজয় চন্দ্র বর্মণের গাড়িতে হামলার অভিযোগ এনেছেন। বামফ্রন্টের সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে বলেও জানান তৃণমূল প্রার্থী। যদিও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন তৃণমূলের আসলে মিথ্যা কথা বলা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
আলীপুর দুয়ারের কিছু ভোট কেন্দ্রে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা হাঙ্গামা করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৭:০৪ ৪০৬ বার পঠিত