ডেস্করিপোর্টঃদশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব (ব্যয় বিবরণী) ২০ এপ্রিলের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আজ বুধবার এ চিঠি সব রির্টানিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে বলে জানান সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি ফাইল মঙ্গলবারই অনুমোদনের জন্য সচিবের কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার তা অনুমোদিত হলে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে।৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যায়ের হিসাব ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়ার আইনি বিধান রয়েছে। কোনো প্রার্থী গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৪৪ সি অনুযায়ী নির্বাচনী ব্যয়ের রিটার্ন যথাযথভাবে দাখিল না করলে এবং এ সংক্রান্ত আদেশ লঙ্ঘন করলে আদেশের ৭৪ ধারা অনুযায়ী তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধের দায়ে দায়ী হবেন।
এ অপরাধের শাস্তি হিসেবে জরিমানাসহ কমপক্ষে দুই বছর এবং অনধিক সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড রয়েছে। গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনে ব্যয়ের হিসাব সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ দিকে গত ৮ জানুয়ারি নির্বাচিত ২৯৮ জনের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে যশোর-১ ও ২ আসনের গেজেট স্থগিত করা হয়। সে ক্ষেত্রে ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে গত ৭ ফেব্রুয়ারি।
কিন্তু এখন পর্যন্ত কয়েকজন ছাড়া কারোরই হিসাব নির্বাচন কমিশনে পাঠাননি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান বলেন, রিটার্নিং অফিসারদের কাছে প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব জমার দেওয়ার বিধান রয়েছে। পরে রিটার্নিং অফিসাররা ডাকযোগে কমিশনে পাঠাবেন। কোনো প্রার্থী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যয়ের হিসাব দিতে ব্যর্থ হলে রিটার্নিং অফিসাররাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার প্রতি আট টাকা ব্যয় নির্ধারণ করেছিল নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া প্রার্থীর ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। যা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে ১০ লাখ টাকা বেশি এবং ভোটার প্রতি তনি টাকা বেশি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নির্বাচনী ব্যয় জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন তিনি। জমার একটি কপি তাঁর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনেও জমা দিয়েছেন তিনি। তাঁর দুই আসনে খরচ হয়েছিল মাত্র ১০ লাখ টাকা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটার ছিল ঢাকা-১৯ আসনে। সেখানে ভোটার ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৫৭ জন। সবচেয়ে কম ভোটার ছিল ঝালকাঠি-১ আসনে। সেখানে এক লাখ ৫৪ হাজার ১৮৪ জন ভোটার ছিল। সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২৫ লাখ টাকা। তবে ভোটার কম থাকার কারণে ঝালকাঠি-১ আসনের প্রার্থীদের ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয় ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭২ টাকা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে ১২টি দল ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী মিলে ৫৪৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় ১৫৩ জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৩৯০ জন। পরে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন আরো ১৪৬ জন প্রার্থী। তবে যারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদেরও নির্বাচনী ব্যয় জমা দেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৮:১৩ ৪২৬ বার পঠিত