বঙ্গ-নিউজঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারেক রহমানকে ‘আহাম্মক’ বলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল উত্তেজিত কণ্ঠে তারেককে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আরে আহাম্মক, লেখাপড়া জানে না। তোর বাপ কি নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিল?”তোর বাপ আমাদের ‘স্যার’ বলতে বলতে মুখে লালা বেরিয়ে যেত।”
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক গত ৮ এপ্রিল লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন দেশের প্রথম ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’।
এই বক্তব্যের আগে গত ২৫ মার্চ সেখানে আরেকটি অনুষ্ঠানে তারেক বলেছিলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’।
তারেকের ওই বক্তব্য নিয়েও সংসদে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল।
২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলাসহ কয়েকটি মামলা মাথায় নিয়ে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক।
তারেকের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ তোফায়েল ২১ অগাস্ট মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
গত শতকের ষাটের দশক ধরে বঙ্গবন্ধুর কাছে থেকে সব ঘটনার সাক্ষী তোফায়েল বলেন, “২৫ মার্চ কি জিয়াউর রহমানকে দেখেছি? ‘৭০ এর নির্বাচনের সময় দেখেছি? আমাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছিল, মামলা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে কী হয়েছিল?”
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের দেড়মাস আগের একটি ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “কোরান ছুঁয়ে, বঙ্গবন্ধুর হাতে-পায়ে ধরেছিল, যাতে তাকে (জিয়া) বিদেশে রাষ্ট্রদূত করা না হয়।
“যার কোনো তুলনা হয় না, যাকে দিয়ে পুরো বাংলাদেশকে চিনত, আজ তাকে ওরা ছোট করতে চায়।”
বিদেশে থাকা তারেককে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিদেশি লেখকদের বই পড়ার পরামর্শ দেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফিরেছিল বলে তারেকের বক্তব্যে প্রতিক্রিয়ায় তোফায়েল বলেন, “বেয়াদবির একটা সীমা আছে। বঙ্গবন্ধু দেশে এসেছিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে।”
লন্ডনে ৮ এপ্রিলের অনুষ্ঠানে তারেক রহমান লন্ডনে ৮ এপ্রিলের অনুষ্ঠানে তারেক রহমান তারেকের বক্তব্য গণমাধ্যমে ‘ফলাও’ করে প্রচারের সমালোচনাও করেন এই মন্ত্রী।
তোফায়েলের আগে সংসদে বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদাকে ছেলে সামলানোর পরামর্শ দেন।
“ওই ছেলেকে থামান। যত দিন যাচ্ছে, অর্বাচীনের মতো কথা বলছে। এটা ভুল হচ্ছে।…যদি না থামান তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে যথোপযুক্ত বিচার করা হবে।”
ভারতের মহাত্মা গান্ধী, তুরস্কে কামাল আতাতুর্ক, চীনে মাও সে তুংকে নিয়ে কটূক্তি করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নজিরও তুলে ধরেন নাসিম।
সেভাবে তারেকের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “জাতির জনক, সংবিধান মানবে না,এভাবে ফ্রি স্টাইলে চলবে, তা হবে না। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা যায়। তার বিরুদ্ধে শক্ত ও কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বিএনপির আগাম নির্বাচনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “২০১৯ সালের আগে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা চাইলে আগাম নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু সে সম্ভাবনা নেই বললে চলে।”
তারেকের বক্তব্যে ক্ষোভ জানিয়ে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, “খালেদা জিয়া অশিক্ষিত, তার ছেলেও অশিক্ষিত।”
জাতির পিতার সঙ্গে ‘বেয়াদবির’ জন্য তারেককে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ‘দালাল’ আখ্যায়িত করেন তিনি।
সংবিধান লঙ্ঘন ও ইতিহাস বিকৃতির জন্যে অবিলম্বে তারেকের বিচারের দাবি করেন হুইপ আতিউর রহমান আতিক।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি বলেন, “লন্ডন থেকে চোর-চোট্টারা চিৎকার করছে। তারা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এমন করছে।”
বাংলাদেশ সময়: ১৪:০৩:০৩ ৩২৫ বার পঠিত