বঙ্গ-নিউজঃনির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচন না দেয়া হলে তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন খালেদা জিয়া শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এক সমাবেশে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ আয়োজনের প্রসঙ্গ ধরে সরকারকে এই হুমকি দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
তিনি বলেন, “শত কোটি টাকা খরচ করে জাতীয় সংগীত গাইলে লাভ হবে না। টাকার খরচ করে বাসভর্তি মানুষ নিয়ে এসে এই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এভাবে গিনেস বুকে নাম উঠানো যায় না।
“আমাদের এমন আন্দোলনে হবে, সেখানে টাকা দিয়ে মানুষ আনতে হবে না। ওই গণঅভ্যুত্থান গিনেস বুকে এমনিতেই স্থান পাবে।”
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির চেয়ারপারসন আগামী ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাচন শেষ হলেই নতুন নির্বাচনের দাবিতে জোরালো আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
“দেশে আজ গণতন্ত্র মৃত। আইনের শাসন, মানবাধিকার কোনো কিছুই নেই। এভাবে দেশ চলতে পারে না। উপজেলা নির্বাচন ৩১ মার্চ শেষ হবে, এরপর আন্দোলন শুরু করা হবে।”
“সরকারকে বলে দিতে চাই, বহুত হয়েছে, জনগণের অর্থ অপচয় করে এভাবে জনপ্রতিনিধিত্বহীন সংসদ চালানোর আর প্রয়োজন নেই। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।”
বিএনপি আগাম নির্বাচন দাবি করলেও তাতে সাড়া না দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছেন, পাঁচ বছরের আগে কোনো নির্বাচন হবে না।
বিএনপির বর্জনের মধ্যে ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বলে গঠিত সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে খালেদা বলেন, “এই সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে। তাই আন্দোলন আমাদের করতেই হবে।”
উপজেলা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, কেবল গোটা বাংলাদেশের মানুষ নয়, বিদেশিরাও মনে করে।
“সেজন্য বিদেশিরা বলেছে, সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা দেরি করলে চলবে না।”
সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনে হলে হারলেও ফলাফল মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিএনপি সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খালেদা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর বিকালে কর্মঅধিবেশন বসে। রোববার হবে ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনে দুই প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ‘শওকত মাহমুদ-এম এ আজিজ’ এবং ‘গোলাম মহিউদ্দিন খান-এলাহী নেওয়াজ খান সাজু’ পরিষদ।
বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, আবদুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, এম আবদুল্লাহ, শামসুল হক হায়দারী, মো. আনিসুজ্জামান, সৈয়দ ফজলে রাব্বী ডলার, সরদার আবদুর রহমান, শাহ আলম শফি, মহিদুল ইসলাম মন্টু, আতাহার ইকবাল, জি এম হিরু, নজরুল ইসলাম মুকুল।
সাংবাদিকদের এই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়া, সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আমান উল্লাহ আমান, মারুফ কামাল খান, নাজিম উদ্দিন আলম, সানাউল্লাহ মিয়া, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আখতার প্রমুখ।
সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন আমানুল্লাহ কবীর, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, খন্দকার মনিরুল আলম, এম এ আজিজ, ইস্কান্দর আলী চৌধুরী, গোলাম মহিউদ্দিন খান, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, মাহমুদ শফিক, আবদুস শহীদ, আবু সালেহ, বাকের হোসাইন, আমিনুল ইসলাম কাগজী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:১৮:৪৭ ৪৭৪ বার পঠিত