বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃক্যারিয়ারের শুরু থেকেই রহস্যময়ী ছিলেন সারিকা। তাকে কেউই সঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। চুপিসারে প্রেম, হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া কিংবা রাতবিরাতে গাড়ি করে ঘুরে বেড়ানো- সবকিছুতেই যেন রহস্যের গন্ধ পাওয়া গেছে। তার সাবেক প্রেমিক নিরবও তাকে ঠিকভাবে আবিষ্কার করতে পারেননি। নিরব নিজেই সে কথা স্বীকার করেছেন। এ কারণেই নিরবের মধ্যে তাকে ঘিরে নানা বিষয়ে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দানা বাঁধতে থাকে। তাই দীর্ঘ প্রণয়ের পরও অবশেষে তাদের সম্পর্ক ভাঙনে রূপ নেয়। তবে সারিকা এবার নিজেই তার রহস্য ভাঙতে যাচ্ছেন। বিয়ে করে সংসারী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ৪ এপ্রিল তার আকদ হবে। সারিকার হবু বর ব্যবসায়ী মাহিম করিম। কিন্তু সারিকা এর চেয়ে বেশি কিছু তার সম্পর্কে বলতে নারাজ। তবে তিনি জানিয়েছেন, উভয় পরিবারের সম্মতিতেই তাদের আকদ হচ্ছে।
এক বছর ধরে সারিকা মিডিয়ায় ছিলেন না। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, সাবেক প্রেমিকের কারণেই তিনি মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন। একটা সময় তিনি সত্যি সত্যিই নিরবের প্রেমে মশগুল ছিলেন। যদিও পরবর্তীতে সেই ভালোবাসা দুরাশায় রূপ নেয়। কিন্তু মিডিয়ায় থাকতে হলে সাবেক প্রেমিকের সানি্নধ্যে তাকে আবার আসতে হতো। তাই সারিকা মিডিয়াকেই বিদায় জানিয়েছেন। নিরব-সারিকার ভাঙন তাদের দুর্ভাগ্যই বলা চলে। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তারা পরস্পরের প্রেমে পড়েন। উভয় পরিবার তাদের মেনেও নিয়েছিল। তারা বিয়ে করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মতের অমিল এবং পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস দ্রুত বাড়তে থাকে। তাই ভাঙন অনিবার্য হয়ে ওঠে। নিরব নিঃসঙ্গতাকে দ্রুত কাটিয়ে উঠলেও সারিকা পারেননি। তিনি বিভিন্ন কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তাই স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি হয়ে নিঃসঙ্গতাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছেন। তবে এ সময় সারিকার পরিবার তার পাশেই ছিল। ছয় মাস আগে মাহিম করিমের সঙ্গে সারিকার পরিচয় ঘটে। তিনি সারিকার নিঃসঙ্গ সময়টায় সঙ্গ দিয়ে যান। সারিকার পরিবারও ছেলেটিকে পছন্দ করে। ফলে তারা পরস্পরের সঙ্গে গাটছড়া বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জানা গেছে, কৈশোরে সারিকা পাইলট হতে চাইতেন। এ ইচ্ছা তার মনে এখনো গেঁথে রয়েছে। তাই পাইলট হওয়ার ইচ্ছাটা বাস্তবায়ন করতে চাইছেন। বিয়ের পর পরই বিমান চালনার ওপর প্রশিক্ষণ নেবেন তিনি।
অভিনয়ে ফিরবেন কি না_ এ বিষয়ে জানতে চাইলে সারিকা জানান, অভিনয়ের নেশাটা তার পুরোপুরি কেটে গেছে। তাই বিয়ের পর যথসম্ভব মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করবেন। তবে একটা সময় সারিকা কিন্তু অভিনয়ে বুঁদ ছিলেন। তখন অভিনয় ছাড়ার কথা কল্পনাও করেননি। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানেই তিনি তার মত পাল্টিয়ে ফেলেছেন। আর সে কারণেই সমালোচকরা বলছেন, ‘সারিকার কথার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগই রয়েছে। দুই দিন পরপর তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টান। হয়তো বা কদিন বাদে তাকে আবার অভিনয়ে দেখা যাবে।’ যদি তাই হয়, তাহলে সারিকাভক্তদের জন্য সুখবরই বটে। কারণ হাজারো তরুণের হৃদয়ে সারিকা রানী হয়েই বসবাস করছেন।
২০০৬ সালে গাজী শুভ্রর পরিচালনায় গ্রামীণফোনের ডিজুস প্যাকেজের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে মিডিয়ায় অভিষেক হয়েছিল সারিকার। স্বল্পসময়ের ব্যবধানেই দর্শকপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন তিনি। তবে বিতর্ক যেন তার পিছু লেগেই ছিল। খামখেয়ালিপনা, কাজে উদাসীনতা, শিডিউল ফাঁসানোসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে প্রায়ই শোনা যেত। তাই একসময় তিনি নির্মাতাদের অস্থা হারিয়ে ফেলেন। ধীরে ধীরে তার কাজের পরিমাণটাও কমে আসে। মূলত বিতর্কিত অবস্থানে থাকার কারণেই তিনি দীর্ঘ দিন চেষ্টা করেও চলচ্চিত্রের খাতায় নাম লেখাতে পারেননি। এ আফসোস সারিকার আজীবন থেকে যাবে। তবে যাই হোক, এবার সারিকা তার বিতর্কিত কর্মকা-ের অবসান ঘটিয়ে সাংসারিক জীবনে প্রবেশ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন, এটাই সবার কামনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:০৬:১১ ৪০৩ বার পঠিত