ডেস্করিপোর্টঃজাতীয় পর্যায়ে গৌরবময় ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশের নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০১৪ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করছেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ পাক বাহিনীর কঠোর নজরদারি ভেদ করে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ রেকর্ড ও সংরক্ষণকারী সাবেক গণপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আবুল খায়ের (মরণোত্তর)।পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় কুমিল্লা সেনানিবাসে ব্রিগেড কমান্ডারের নিকট জেলা পুলিশের অস্ত্র ভাণ্ডারের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারী এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী অবস্থায় শাহাদাত বরণকারী শহীদ মুন্সী কবির উদ্দিন আহমেদ (মরণোত্তর)। বরিশাল জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় সহায়তা প্রদানকালে শাহাদাৎ বরণকারী শহীদ কাজী আজিজুল ইসলাম (মরণোত্তর)।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অধীনস্থ সেনাদল নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা এবং মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপালনকারী লে. কর্নেল (অব.) মো. আবু ওসমান চৌধুরী। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কিশোরগঞ্জের তদানীন্তন মহকুমা প্রশাসক ড. খসরুজ্জামান চৌধুরী (মরণোত্তর)।
সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এবং ১৯৭১ সালের ৫ মে পিরোজপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পদাতিক, নৌ ও বিমান বাহিনীর যুগপৎ হামলায় শাহাদাৎ বরণকারী শহীদ এস বি এম মিজানুর রহমান (মরণোত্তর)।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধের ৫ নম্বর সেক্টরের অধীন জেলা সাব সেক্টরের রেজিমেন্টাল মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্বপালনকারী ডা. মোহাম্মদ হারিছ আলী (মরণোত্তর)। শিক্ষাক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের এম.এন.এ ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বপালনকারী ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামান (মরণোত্তর)।
সংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ তথা দেশের সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী স্বনামধন্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। এছাড়া কৃষি গবেষণায়, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হচ্ছে।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কূটনৈতিক, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট নাগরিকরা। স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জাতীয় পুরস্কার। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ২০৩ জন স্বনামধন্য ব্যক্তি এবং ২৪টি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননা পত্র প্রদান করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩৪ মিনিটে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্যে দিয়ে পদক প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৫:৫৭ ৪৫৬ বার পঠিত