রাসেদুল হাসান লিটন(বঙ্গ-নিউজ)ঃপরীক্ষার ফল বিবেচনায় না নিয়ে ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীকে চাকরি দেয়ার জন্য মন্ত্রীর কাছে দাবি তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়ক আবদুল আজিজের মতে, ছাত্রলীগ নেতাদের ‘রেজাল্টের প্রয়োজন নেই’।”তাদের গায়ে থাকা ক্ষতচিহ্নই তাদের বড় যোগ্যতা। তাদের আর কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন নেই।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে এ দাবি তুলে ধরেন অধ্যাপক আজিজ।
অবশ্য তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে মন্ত্রী মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের পক্ষেই মত দেন।
আব্দুল আজিজ বলেন, “বিভিন্ন কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমন্ত্রিত অতিথির কাছে তাদের বিভিন্ন দাবির ফিরিস্তি তুলে ধরলেও আজ তারা কোনো দাবি জানায়নি। তাই তাদের পক্ষ থেকে আমিই দাবি জানাচ্ছি, ছাত্রলীগের সকল নেতা কর্মীকে চাকরি দিতে হবে।”
এর পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এই শিক্ষক বলেন, “আমি ছাত্রলীগের এক নেতাকে চাকরির জন্য মন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সব ক’টি পরীক্ষায় তার থার্ড ক্লাস থাকায় মন্ত্রী চাকরি দিতে অস্বীকৃতি জানান।
“তখন আমি ওই ছাত্রলীগ নেতার জামা খুলে তার গায়ের ক্ষতচিহ্ন দেখাতে বলি।”
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, অবশ্যই ছাত্রলীগের প্রত্যেকে চাকরি পাবে। তবে তা হতে হবে মেধার জোরে।
“কারো অনুকম্পা বা করুণার জোরে নয়। কারণ ছাত্রলীগ কারো করুণা বা অনুকম্পার পাত্র নয়।”
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সামনে ত্যাগের গুরুত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিভিন্নভাবে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা কি সেসব ভুলে গেছি?
“শেখ হাসিনা যদি প্রতি মুহূর্তে প্রাণ সংশয়ের মধ্যে থেকে গণতন্ত্রের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য, গরিব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য প্রতিনিয়ত ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন- তাহলে আমরা পারব না কেন?”
নূরের ভাষায়, মুক্তিযুদ্ধের শুরু আছে, শেষ নেই। দেশ স্বাধীন হলেও সব মানুষের মুক্তি মেলেনি। কাজেই মুক্তিযুদ্ধ অনেক আগেই শেষ হয়েছে বলে এখন আর ত্যাগের প্রয়োজন নেই মনে করা ঠিক হবে না।
“মানুষের মুক্তির সংগ্রামে শেখ হাসিনাকে প্রধান সেনাপতি মেনে তার পিছনে শক্তি সঞ্চার করতে হবে একজন দক্ষ সৈনিক হিসেবে, একজন দেশপ্রেমিক বাঙালি হিসেবে। সেটা যদি করতে পারি তাহলে আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারব।”
দেশ একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে মন্তব্য করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার ‘বিভৎস ষড়যন্ত্র’ চলছে গত কয়েক বছর ধরে।
এ রকম একটি সময়ে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত সৈনিক’ হিসাবে সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান নূর।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী আদর্শের সংগঠন। তারা দেশের সমস্ত ছাত্রসমাজকে একত্রিত করে নেতৃত্ব দেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু এজন্য ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে নীতি ও আদর্শ ধারণ করতে হবে।”
বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বায়তুল্লাহ কাদেরী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল শাখার নেতাকর্মীরা আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:২৪:৪৫ ৫৩৪ বার পঠিত