বঙ্গনিউজ:প্রাপ্তির ঘরে বড় একটা শূন্য। শ্রীলঙ্কা সিরিজ আর এশিয়া কাপে টানা হারের মধ্যে থাকা বাংলাদেশ দল তবু বলতে পারে, এশিয়া কাপের শেষ দুই ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো অন্তত গড়ে তোলা গেছে! বাস্তবতা হলো লড়াই করে হারের ‘সাফল্যে’ প্রাপ্তি খোঁজার দিন আর নেই। সাফল্য মানে এখন জয়।
এশিয়া কাপে তিনটি ম্যাচে কাঙ্ক্ষিত সেই জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেও কেন পারল না বাংলাদেশ? কেন শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টটা কাটল দুঃস্বপ্নের মতো? বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের দৃষ্টিতে ‘কাছের মানুষদের’ চাপেই নাকি ভেঙে পড়েছে মুশফিকুর রহিমের দল, ‘আমাদের এই দলটা খুব প্রতিভাবান এবং এরাই প্রায় দুই বছর ধরে ভালো খেলে আসছিল। আমার মনে হয় আমাদের কাছের কিছু মানুষের কথাবার্তা খেলোয়াড়দের জন্য চাপ হয়ে গিয়েছিল। সেটাই সমস্যা করেছে।’ এই ‘কাছের মানুষ’ কারা তা অবশ্য খুলে বলেননি আকরাম খান। তবে কথাবার্তায় মনে হলো ইঙ্গিতটা বিসিবির কোনো কোনো কর্মকর্তার দিকেই, ‘খেলার মাঝখানে কিছু বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকে অনেক ধরনের মন্তব্য করেছেন। দলের জন্য এসব কখনোই ভালো নয়।’
পুরো শক্তির দল না পাওয়াটাকেও ব্যর্থতার একটা কারণ মনে করেন ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান, ‘আমরা সেরা দল পাইনি, এটাও একটা কারণ। অনেকের চোটাঘাত ছিল। সব মিলিয়ে খুব বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে দলটা। অন্য সময় হলে এই ম্যাচগুলোর অনেকগুলোতেই আমরা জিততাম। কিন্তু এবার পারিনি।’ আকরাম তবু আশাবাদী, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অন্য চেহারার বাংলাদেশ দলকে দেখবে সবাই।
এশিয়া কাপের পর দুই দিন বিশ্রামে কাটিয়ে আগামীকাল শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ক্যাম্প। ফতুল্লায় ১২ ও ১৪ মার্চ আয়ারল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। তার আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলের পাঁচ ক্রিকেটার সুযোগ পাচ্ছেন আরও একটা ম্যাচ খেলার। গতকালই ঢাকায় চলে আসা জিম্বাবুয়ে দল অফিশিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচের বাইরে ফতুল্লা ও চট্টগ্রামে দুটি আনঅফিশিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে। চট্টগ্রামের ম্যাচে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলের সঙ্গে তাদের খেলার কথা। আর কাল ফতুল্লা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ‘এ’। আরাফাত সানি, মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, মুক্তার আলী, তাইজুল ইসলাম, মোহাম্মদ শহীদ ও জিয়াউর রহমানের সঙ্গে এই দলে আছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকা ফরহাদ রেজা, শামসুর রহমান, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ ও নাসির হোসেনও। ‘এ’ দলে না যাওয়া বিশ্বকাপ দলের খেলোয়াড়েরা এদিন থেকেই অনুশীলন শুরু করবেন মিরপুরে।
বাংলাদেশ ‘এ’ দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আরও একটা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ১৮ মার্চ। ম্যাচটা দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও অস্ট্রেলিয়া সেটি খেলবে না বলে জানিয়েছে। সে জন্যই দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে বিকল্প হিসেবে দাঁড়াবে বাংলাদেশ ‘এ’। তবে ওই ম্যাচে ‘এ’ দলের হয়ে খেলবেন না বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলে থাকা কেউ।
১৬ মার্চ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। তার আগের দিন অনুশীলনের বাইরেও বিশেষ একটা ‘ক্লাসে’ বসবেন মুশফিকের দলের পেসাররা। ‘ক্লাস’ নেবেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার বর্তমানে ধারাভাষ্যকার ওয়াসিম আকরাম। এই উদ্যোগটা নিয়েছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পাওয়া বিসিবির পরিচালক আকরাম খান, ‘ফাস্ট বোলিং নিয়ে আমরা সব সময়ই সমস্যায় ভুগি। কাল (পরশু) ইনিংস বিরতির সময় ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি। তিনি কথা দিয়েছেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন আমাদের পেস বোলারদের নিয়ে বসে কিছু পরামর্শ দেবেন।’ এ ছাড়া ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দলের পেসারদের সঙ্গে এক-দেড় মাস কাজ করার ব্যাপারেও নাকি মৌখিকভাবে রাজি হয়েছেন ওয়াসিম আকরাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:০০:৩৪ ৪৭৩ বার পঠিত