বাড়তে শুরু করেছে আমদানি ব্যয়।

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » বাড়তে শুরু করেছে আমদানি ব্যয়।
বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০১৪



ctg_port.jpgবঙ্গ-নিউজ ডকমঃহঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয়, যাকে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ ফিরে আসারই লক্ষণ বলে মনে করছেন একজন অর্থনীতিবিদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে। আর এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।আমদানি বাড়ার প্রমাণ মিলেছে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সর্বশেষ বিল থেকেও। সদস্য দেশগুলো থেকে আমদানি বাণিজ্যের বিল হিসাবে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে আকুর ৯৬ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।

গত দুই বছরের কখনোই এই বিল ৮০ কোটি ডলারের বেশি হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমদানি বাড়ায় আকুর বিল বেড়ে গেছে। গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদে ৭৮ কোটি ডলার শোধ করা হয়েছিল। এবার পরিশোধ করতে হবে ৯৬ কোটি ডলার।”

চলতি সপ্তাহেই আকুর এই দেনা পরিশোধ করা হবে বলে জানান তিনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানির জন্য দুই হাজার ২৪২ কোটি ২৬ লাখ (২২ দশমিক ৪২ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল দুই হাজার ২৮ কোটি ২৪ লাখ (২০ দশমিক ২৮ বিলিয়ন) ডলার।

অর্থাৎ, এই সময়ে আমদানির জন্য এলসি খোলার হার বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

আর জুলাই-জানুয়ারি সময়ে এলসি নিষ্পত্তির হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

আমদানি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসছে চাল। ওই সময়ে চাল আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে ১০৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। নিষ্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ১০০০ দশমিক ১০ শতাংশ।

আর পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে ৯৮ দশমিক ২৭ শতাংশ, দুগ্ধজাত পণ্য আমদানিতে বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।

শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি খোলার পরিমাণও ৫৪ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত মনে করছেন, নির্বাচন ঘিরে গত বছরের অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ ফিরে আসছে বলেই আমদানি বাড়ছে।

অবশ্য মূলধনী যন্ত্রপাতির (ক্যাপিটাল মেশিনারি) আমদানি বাড়াকে সন্দেহের চোখে দেখছেন তিনি।

“আমার কাছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি বাড়া অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। এর আড়ালে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা-তা খতিয়ে দেখতে হবে।”

এর ব্যাখ্যায় এই গবেষক বলেন, সরকার বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে অধিকাংশ মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক শূন্যের ঘরে রেখেছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অর্থ পাচার করতে পারে।

“অনেক সময় বন্দরে খালি কন্টেইনার ধরা পড়ে। আবার এক পণ্যের বদলে অন্য পণ্য আসে। এখনও তেমন হচ্ছে কিনা- তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।”

জায়েদ বখত বলেন, “অবশ্য দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরে আসায় বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সত্যিই যদি ক্যাপিটাল মেশিনারিজ, শিল্পের কাঁচামালসহ শিল্পখাতের অন্যান্য পণ্য আমদানি বাড়ে তাহলে অর্থনীতির জন্য অবশ্যই ভালো।”

গত ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় আগের বছরের (২০১১-১২) চেয়ে ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ কমেছিল।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৩:৪৩   ৩৯৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থ ও বানিজ্য’র আরও খবর


অর্থনীতি নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ
ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ, সরানো নিয়ে প্রশ্ন
চেক ডিজঅনার মামলার রায় দুই মাসের জন্য স্থগিত
মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসের আড়ালে হুন্ডি, গ্রেপ্তার ৬
১৮ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৫ কোটি ৯৯ লাখ ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক
বৈশ্বিক নানা সংকট সত্ত্বেও বাড়লো মাথাপিছু আয়
বাংলাদেশ গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে : মার্টিন রাইজার
আইএমএফ এর সাথে সমঝোতা : সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে
আইএমএফ এর ঋণ গ্রহণ করা হবে নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তোলার জন্য: বাণিজ্যমন্ত্রী
টবগী-১ কূপে পাওয়া যাবে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

আর্কাইভ