অতীত রেকর্ড ভঙ্গ, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে চার মাসে মিলল সোয়া ৯ কোটি টাকা

Home Page » এক্সক্লুসিভ » অতীত রেকর্ড ভঙ্গ, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে চার মাসে মিলল সোয়া ৯ কোটি টাকা
রবিবার ● ১৩ এপ্রিল ২০২৫


ফাইল ছবি- পাগলা মসজিদের দান বাক্সের টাকা গুণার দৃশ্য

বঙ্গ-নিউজ: কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে আবারও বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে, যা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গতকাল মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হলে দিনভর গণনা শেষে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া যায়। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ মসজিদের ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারী রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত।

টাকা গণনা করার  বিশাল কর্মযজ্ঞে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ৭৫ জন ছাত্র, ৪৫ জন শিক্ষক ও স্টাফ, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ১৯৪ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন স্টাফ অংশ নেন। পুরো প্রক্রিয়াটি কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এতে প্রশাসন ক্যাডারের ২৪ জন কর্মকর্তা, ১৪ জন সেনা সদস্য, ৩০ জন পুলিশ সদস্য এবং ৯ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

গতকাল সকাল ৭টায় জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে এই অর্থ গণনার মহাযজ্ঞ। গণনাকালে দেশীয় মুদ্রার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা এবং স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান জানান, বৈদেশিক মুদ্রা ও গহনাগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে পরবর্তীতে ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে। প্রাপ্ত অর্থ ও অন্যান্য সামগ্রী মিলিয়ে মোট ২৮টি বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় গণনার জন্য আনা হয়েছিল।

এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ৩০ নভেম্বর মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল, তখন পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। সাধারণত প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্স খোলার নিয়ম থাকলেও পবিত্র রমজান মাসের কারণে এবার খোলা হয়েছে ৪ মাস ১২ দিন পর।

এই বিশাল কর্মযজ্ঞে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ৭৫ জন ছাত্র, ৪৫ জন শিক্ষক ও স্টাফ, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ১৯৪ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন স্টাফ অংশ নেন। পুরো প্রক্রিয়াটি কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এতে প্রশাসন ক্যাডারের ২৪ জন কর্মকর্তা, ১৪ জন সেনা সদস্য, ৩০ জন পুলিশ সদস্য এবং ৯ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, নগদ অর্থের পাশাপাশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পাগলা মসজিদে বিভিন্ন মানতের অংশ হিসেবে গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, কবুতর, দুধ এবং শাকসবজিও দান করে থাকেন। এই সামগ্রীগুলো উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়।

জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, দানের এই অর্থ মসজিদের সার্বিক উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মানবকল্যাণে ব্যয় করা হয়। টাকার লভ্যাংশ থেকে জটিল রোগে আক্রান্ত অসহায় ব্যক্তিদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, মসজিদ কমপ্লেক্সের মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের ভরণপোষণ এবং মসজিদের পরিচালন ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এছাড়াও, জমানো টাকা দিয়ে মুসল্লিদের সুবিধার্থে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজের শেড নির্মাণ এবং মসজিদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৯:৪৯ ● ৯০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ