
ওহ বসন্ত! কেন বারেবার প্রদক্ষিণ কর আমায়? শুষ্ক হৃদয়ে ঢেলে দাও সৌরভের মায়া, জানো তো, আমার আকাশে বসন্ত আসে না, তবু কেন এ হৃদয়ে তুললে এমন হাওয়া?
তৃষ্ণার্ত প্রাণে ঢালো রঙিন বিভ্রম, চোখে চোখ রেখে কাঁপাও অস্থির মন, কেন শিউলির সুবাসে ভুলিয়ে দাও পথ? যেখানে গন্তব্য শুধু শূন্যতায় বাঁধা?
আমার তো ভিন্ন ভাষা, ছিন্ন সব মন্ত্র, তবু কেন তুমি ডাক পাঠাও বারবার? আমার সন্ধ্যায় নেই দীপের আভা, তবু কেন চাও আলো হয়ে জ্বলতে?
তুমি এলে, ফুলেরা হাসে দোলনায়, পাখিরা গায় সুরেলা গানের মালা, তবে কেন আমার ভেতর ফাটে শূন্যতা? কেন হৃদয়ে বাজে নিঃসঙ্গতার বীণা?
বিভ্রম
উৎকলিত রহমানের কবিতা ‘বন্দনা!’
তুমি কি জানো, এ অন্তর আগুন হয়ে জ্বলে? স্পর্শহীন শীতল শিখায় দগ্ধ মন, তোমার উষ্ণতার এক ফোঁটা চেয়ে, শুধু ছাই হওয়া প্রতীক্ষায় দিন গোনে।
তুমি আসো, তুমি যাও, রেখে যাও ক্ষত, তবু কেন স্মৃতিরা ফোটে শিমুলের মতো? তুমি কি নিঠুর? তুমি কি নিষ্ঠুর? নাকি এ খেলায় আমিই এক পরাজিত?
তোমার ছোঁয়ায় দিগন্তে রঙের উৎসব, ফুল ফোটে, নদী বয়ে চলে রূপের মিছিলে, তবে কেন আমার চোখে জমে থাকে অন্ধকার? কেন তোমার পূর্ণ চোখে পূর্ব কোণে অমাবস্যা?
তুমি কি জানো, এ অন্তর রিক্ত মাঠ, যেখানে বসন্ত মানায় না একদম? যেখানে দখিনা বাতাসও নিঃস্ব, যেখানে উষ্ণতা ছুঁয়ে যায় না!
তবু কেন আমায় ঘিরে দাও রঙে? কেন কোকিলের গানে ভাসাও এ মন? যখন জানো, এ সত্তা ধারণে অপারগ, তখন কেন ভালোবাসার ছল?
ওহ বসন্ত! এই হৃদয় তো তোমার নয়, তবু কেন প্রতি পলে ডাক পাঠাও? কেন কোকিলের কণ্ঠে নাম লিখে দাও, যখন জানো, এ বাসনা শুধুই মরীচিকা?
তোমার ফুলেল পথে পা রাখা হল না, তোমার আকাশে ওড়ার ডানাও নেই, তবু কেন আসো, কেন দুলিয়ে দাও মন? বলো বসন্ত, তুমি কি এক নিঠুর ছলনা?