
ব্যুরো প্রধান, সিলেট,বঙ্গ-নিউজ :
অন্তবর্তী সরকারের নির্দেশনায় চলমান অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে থানার অতি উৎসাহী ওসিকে মোটা অঙ্কের ঘুস দিয়ে মিজানুর রহমান মিজান নামে এক ব্যাক্তিকে যুবলীগ নেতা সাজানো হয়। তাকে গ্রেফতার করানোর পর ওই ব্যক্তির পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে খোদ উপজেলা বিএনপির দু’গ্রুপ একে অপরের অফিস ভাঙচুর করেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় মধ্যনগর উপজেলা সদর, বাজার, বাজারের আশপাশের এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন শুক্রবার রাত ১২টা থেকে।পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে প্রশাসন কর্তৃক শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১৪৪ধারা প্রত্যাহার করা হলেও বিবাদমান দুই গ্রুপ যে কোনো সময় সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এঘটনায় জেলা যুবদলের সহ বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এমএ শহীদকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
রোববার মধ্যনগরে সরজমিনে থাকা মানুষজন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় মধ্যনগর থানার অতি উৎসাহী ওসি মো. সজীব রহমানের নেতৃত্বে অপারেশন ডেভিল হান্ট’র অভিযানে ফায়দা নিতে মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে উপজেলা বিএনপির নেতা ও দক্ষিণ বংশীকুন্ডার এক ইউপি সদস্যের ইশারায় ওই ইউনিয়নের ৯নং নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি সাজিয়ে আটাইশা মাছিমপুর গ্রামের মিজানুর রহমান মিজানকে গ্রেফতার করানো হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির নেতা এমএ শহীদ অভিযোগ করেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম মজনুর গোপন নির্দেশ পালন করতে গিয়ে ওসির চোরাচালান বাণিজ্যের সীমান্তের সোর্স চাঁদা আদায়কারি সুজন মিয়া ওই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আট্ইাশা মাছিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার সাথে পারিবারীক দ্বন্ধের কারনে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে থানার ওসিকে দিয়ে গ্রেফতার করানো হয় নিরীহ পরিবারের মিজানকে। এর প্রতিবাদ করায় মজনুর লোকজন উপজেলা সদর বাজারে থাকা আমাদের বিএনপি দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করেছে।
মধ্যনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম মজনুর দাবি, গ্রেফতার মিজানুর রহমান মিজান যুবলীগ নেতা। থানা পুলিশ কেন তাকে গ্রেফতার করেছে সেটি থানার ওসি বলতে পারবেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে যুবদল নেতা শহীদ তার পক্ষ নিয়ে উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে এমনকি আমাদের বিএনপির অফিসটি ভাংচুর করেছে।
উপজেলার দক্ষিণ বংশী কুন্ডা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আটাইশা মাছিমপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজনের নিকট অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, সুজন বলেন, আমি কিছু জানি না, থানার ওসি স্যারকে জিজ্ঞাসা করেন, স্যার সব কিছু জানেন।
রোববার মধ্যনগর থানার ওসি মো. সজীব রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের দায়েরকৃত বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী হিসাবে ওয়ার্ড যুবলীগের সহ সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিজান এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন না কিন্তু ওই মামলা তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
উপজেলার দক্ষিণ বংশী কুন্ডা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটিতে তার নাম পদ পদবী নেই, পরিবারের অভিযোগ সীমান্তের চোরাচালান বাণিজ্যের আপনার (ওসি) সোর্স চাঁদা আদায়কারি ইউপি সদস্য সুজন ও উপজেলা বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম মজনুর মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে মিজানকে হয়রানীমূলক গ্রেফতার করেছেন,এমন প্রশ্নের উওরে ওসি সজীব বললেন, এখন তো কত কথাই বলবে, আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি রনজিত সরকার মিজানের পক্ষে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছেন যুবলীগ নেতা বলে, এটি প্রমাণ করে মিজান যুবলীগ নেতা।
কমিটিতে নাম পদবীই যেখানে নেই সেখানে সাবেক এমপির দেয়া পোষ্ট দেখে কাউকে যুবলীগ নেতা হিসাবে আমলে নিয়ে মামলায় জড়ানো কতটুকু আইনসিদ্ধ এমন প্রশ্নের উওর এড়িয়ে যান ওসি।
সাবেক এমপি রনজিত সরকারের এক ঘনিষ্ঠজন জানান,যুবলীগ নেতা দাবি করে গ্রেফতারের সংবাদ ও ছবি দেখে সাবেক এমপি রনজিত সরকার ফেসবুকে মিজানের মুক্তির দাবিতে পোষ্ট দিয়েছিলেন।পরবর্তীতে মিজান যুবলীগের কেউ নন জেনে তিনি ওই পোস্ট ডিলিট করেছেন।