বঙ্গনিউজ : যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়া জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক আবার চালু হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের আশ্বাসের পরই টিকটক পুনরায় চালু করা হয়েছে, যা দেশটির ১৭ কোটি ব্যবহারকারীর জন্য এক বড় সুখবর।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তিনি একটি নির্বাহী আদেশ জারি করবেন, যা চীনা মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম টিকটকের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করবে।
এ ছাড়া ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, এই নির্বাহী আদেশটি টিকটককে সময় দেবে, যাতে তারা কোনো মার্কিন অংশীদারকে কোম্পানির ৫০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে পারে।
এর আগে টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ছিলেন ট্রাম্প, তবে সম্প্রতি তার অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। তার দাবি, সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় টিকটকে তার ভিডিওগুলোর যে ব্যাপক ভিউ ছিল, তা তার সিদ্ধান্তের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতেই যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল টিকটক অ্যাপের। এই বন্ধের আগের দিন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট একটি আইনের পক্ষে রায় দেয়, যা চীনের বাইটড্যান্স কোম্পানির মালিকানাধীন টিকটককে দেশটিতে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল।
ওই আইনের আওতায় রোববার (১৯ জানুয়ারি) মধ্যে টিকটকের মালিকানা বিক্রি করতে হবে, না হলে টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার হুমকি ছিল।
১৯ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আইনের কার্যকরের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য এক নির্বাহী আদেশ জারির মাধ্যমে উদ্যোগ নিতে প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, টিকটক বন্ধ হওয়ার আগেই আমরা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চাই। সেই সঙ্গে তিনি টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র শাখার ৫০ শতাংশ মালিকানা নেওয়ার কথাও তুলে ধরেন।
নিজের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ এ এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, তিনি চাইছেন টিকটক ‘ভালো মানুষের হাতে’ চলে আসুক। এ বিষয়ে তিনি টিকটককে মার্কিন বাজারে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন। টিকটকও এক বিবৃতিতে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে, তবে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি, বিশেষ করে মার্কিন মালিকানার বিষয়ে।
প্রসঙ্গত, টিকটকের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ হলো, এই অ্যাপটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। যদিও টিকটক ও তার মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তবে এখন ট্রাম্পের আশ্বাসে এই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে দেখা যাচ্ছে।
এখন দেখা যাবে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক তার কার্যক্রম কীভাবে পরিচালনা করে এবং এই নতুন ব্যবস্থাপনা দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগগুলো কতটুকু মেটাতে পারে।