বঙ্গনিউজ ডেস্ক : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মাত্র ১৮ দিনে সাড়ে ১৪০০ বদলির আদেশ হয়েছে। বদলির মধ্যে মেডিকেল অফিসার থেকে শুরু করে পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন। অংশীজন বলছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী ও আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে এই বিপুলসংখ্যক বদলি করা হচ্ছে। তবে অধিদপ্তর বলছে, এটা নিয়মিত কাজের অংশ।
অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও এক প্রকার অচল হয়ে পড়ে। এই সময়ে অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার খুরশীদ আলম ছাড়া উল্লেখযোগ্য আর কেউ অধিদপ্তরে আসতেন না। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর খুরশীদসহ বেশ কয়েকজন পরিচালককে ওএসডি করে মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। এরপর প্রায় এক মাসের বেশি সময় নবনিযুক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিনকে পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন চলে বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক-কর্মচারীর ব্যানারে। ফলে এই সময় অধিদপ্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রম এক প্রকার সীমিত ছিল। এরপর অধ্যাপক নাজমুল হোসেন কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করলেও প্রশাসনিক কাজ হয়নি বললেই চলে। ফলে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বদলি করা হয়।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এক মাসে এই বিপুল বদলি কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। মূলত নতুন সরকার গঠনের পর অধিদপ্তরে যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন, তারা নিজেদের লোকজনকে সুবিধাজনক পদে বদলি করেছেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ বলেন, এই সময়ে যাদের বদলি করা হয়েছে, তাদের অনেকের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে, আবার অনেকে অপেক্ষমাণ ছিলেন। বাকি কিছু বদলি করা হয়েছে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই। তবে তার এই বক্তব্য মানতে নারাজ কিছু কর্মকর্তা। তারা বলছেন, কোনো স্বাভাবিক সময়ে একটি পদের বিপরীতে তিন থেকে চারজনের পদায়ন আগে কখনো হয়নি। এমনকি কোর্স সম্পন্ন হয়নি এমনও অনেককে বদলি-পদায়ন করা হয়েছে। ফলে তাদের উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২২ ও ২৩ অক্টোবর ২৭৭ জনের বদলির আদেশ হয়েছে।