আজ বিশ্ব ডলফিন দিবস

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » আজ বিশ্ব ডলফিন দিবস
বৃহস্পতিবার ● ২৪ অক্টোবর ২০২৪


ফাইল ছবি

বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ স্বাদু পানির ডলফিন সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ২০০৯ সালের ২৪ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বব্যাপী ডলফিন দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।  এরপর থেকে বাংলাদেশে প্রতিবছর দিনটি পালিত হয়ে আসছে।  দিবসের অঙ্গীকার অনুযায়ী, ডলফিল রক্ষায় অভয়াশ্রম ঘোষণাসহ নানা পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।  কিন্তু বাস্তবে জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাণিটি এখন অস্তিত্ব সংকটে।

এই পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব ডলফিন দিবস পালিত হচ্ছে।  প্রতিবছরের মতো এবারো বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করা হবে।  এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নদীর প্রাণ ডলফিন-শুশুক, নিরাপদে বেঁচে থাকুক’।  দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বন অধিদফতরে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে চট্রগ্রাম, খুলনা, বাগেরহাট, পাবনাসহ বিভিন্ন স্থানে জনসচেতনতামুলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশের সর্ববৃহৎ ডলফিনের আবাসস্থল সুন্দরবন এলাকায় অনেক হটস্পট চিহ্নিত করে সেগুলোর মধ্য থেকে পানখালি, শিবসা ও দুধমুখীতে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু সুন্দরবনেই এখন ডলফিনের জন্য ছয়টি অভয়ারণ্য রয়েছে।

সেখানকার জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে সাতটি ডলফিন সংরক্ষণ দল গঠন করা হয়েছে। দলটির জন্য ‘ফান্ড ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন’ প্রণয়ন করেছে মন্ত্রণালয়। পাবনায় তিনটি রক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া নদী ও উপকূলীয় এলাকায় ডলফিনের আবাসস্থল রক্ষায় ‘ডলফিন কনজারভেশন অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রণয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি-বেসরকারি নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও বাংলাদেশে গঙ্গা নদীর ডলফিনসহ অন্যান্য প্রজাতির ডলফিন বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।

এর প্রধান কারণ হলো নদীর দূষণ, অপ্রয়োজনীয় মাছ ধরার জাল, জলবিদ্যুৎ বাঁধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদীর প্রবাহে পরিবর্তন। এদের সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে, যা আমাদের বাস্তুসংস্থানকে ঝুঁকিতে ফেলছে। ডলফিন সংরক্ষণ কেবল একটি প্রজাতি সংরক্ষণ নয়, বরং আমাদের পরিবেশের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। যখন ডলফিনকে রক্ষা করা হয়, তখন তা জলজ পরিবেশের অন্যান্য প্রাণিদের জন্যও উপকার বয়ে আনে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শুশুক ডলফিন ও ইরাবতী ডলফিন নামে দেশে দুটি ডলফিন দেখা যায়। ইরাবতীদের বাস আমাদের ৭২০ কিলোমিটার উপকূলীয় নদী কিংবা সাগরমুখে। আর শুশুক ডলফিন বিচরণ করছে দেশে বিদ্যমান ৭০০ নদীর ২৪ হাজার কিলোমিটারের একটি বড়ো অংশ জুড়ে।  বর্ষামৌসুম ব্যতিরেকে শুষ্ক মৌসুমে এদের আবাসস্থল কমে বেশ সংকুচিত হয়ে যায়। প্রমত্তা পদ্মা, যমুনা, মেঘনাসহ, ব্র্রহ্মপুত্র, হালদা, বলেশ্বর, গড়াই-মধুমতী, ডাকাতিয়া প্রভৃতি নদীই রিভার ডলফিনের উপযুক্ত আবাসস্থল।

জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণ যখন আমাদের নদী, হ্রদ ও সাগরকে বিপর্যস্ত করে তুলছে, তখন ডলফিন এক ধরনের প্রাকৃতিক ‘সতর্ক বার্তা’ দেয়। যদি ডলফিনের সংখ্যা কমতে থাকে বা তাদের মধ্যে রোগ দেখা দেয়, তা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে দূষণ বা অন্যান্য পরিবেশগত সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। তাই ডলফিনের অবস্থান এবং সংখ্যা পরিবেশের সঠিক অবস্থা জানার অন্যতম প্রধান মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত। ডলফিনের সংরক্ষণ সামুদ্রিক জীবনের অন্যান্য প্রজাতির জন্যও উপকারী, কারণ তাদের অনুপস্থিতি বা সংখ্যার হ্রাস সামুদ্রিক পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ডলফিন সুরক্ষা জরুরি।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৭:৩৯ ● ৩২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ