বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ গর্ভাবস্থায় কোনো মা যদি এই রোগে আক্রান্ত হন, তবে সে ক্ষেত্রে মা ও শিশু উভয়ে ঝুঁকিতে পড়তে পারে। রোগীর ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কম বা বেশি দুটিই ক্ষতিকর। এ জন্য অবশ্যই রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হবে। ডেঙ্গুতে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি তিন গুণ বেড়ে যায়।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তেমন উপসর্গ থাকে না। তাদের আবার উপসর্গের ধরন অনুযায়ী তিন গ্রুপে ভাগ করা হয়।
গ্রুপ এ : যাদের সাধারণ জ্বরের মতো থাকে, শরীরে কোনো স্থান দিয়ে রক্তপাত, প্রেসার কমে যাওয়া বা কোষের ভেতর থেকে পানি বা ফ্লুইড বের হয়ে আসার মতো ঘটনা থাকে না। তাদের বাসায় চিকিৎসা নিতে বলা হয় এবং বিপদ চিহ্ন (বমি, তলপেট ব্যথা, পাতলা পায়খানা, রক্ত পড়া) থাকলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করতে বলা হয়।
গ্রুপ বি : (মডারেট/মাঝারি ডেঙ্গু) : তাদের কারো বিপদ চিহ্ন, সঙ্গে হালকা ব্লিডিং থাকতে পারে, না-ও পারে। আবার কারো তেমন কিছু নেই, যদি অন্য কোনো রোগ সঙ্গে থাকে তবে তাকে এই গ্রুপের আওতায় ধরা হয়। রোগীর ডেলিভারি ডেট দেরিতে হলেও প্রটোকল অনুযায়ী ভর্তি করে ইভ্যালুয়েশন করা হয়ে থাকে।
গ্রুপ সি : (সিভিয়ার বা জটিল ডেঙ্গু) : এখানে রোগীর লক্ষণীয় মাত্রায় রক্তপাত থাকতে পারে, শকে বা অজ্ঞান হতে পারে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।
এই গ্রুপের রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসাব্যবস্থার সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে সেবা দিতে হবে।
রোগ নির্ণয় : রোগীর উপসর্গের সঙ্গে রক্তের কিছু পরীক্ষা।
ডেঙ্গু এনসি১ অ্যান্টিজেন : জ্বরের এক থেকে পাঁচ দিন। সঙ্গে সিবিসি (এইচসিটি/হেমাটোক্রিট বেড়ে যায় ডব্লিউবিসি কাউন্ট/শ্বেত রক্তকণিকা কমে যায়, যাকে লিউকোপেনিয়া বলে), এসজিপিটি, এসজিওটি করা হয়ে থাকে (লিভারের কার্যকারিতা বোঝার জন্য)।
ডেঙ্গু আইজিএম অ্যান্ড আইজিজি অ্যান্টিবডি : জ্বরের পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে পাওয়া যায়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে রক্তে হেমাটোক্রিট যদি ২০ শতাংশ বেড়ে যায়, পালস প্রেসার যদি কমে আসে (১০-২০%), শ্বেত রক্তকণিকা পাঁচ হাজারের নিচে নেমে আসে, রক্তের অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট এক লাখের নিচে থাকে, তাহলে ধরে নিতে হবে তার রক্তক্ষরণ হচ্ছে, যাকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলে।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. আরিফা শারমিন মায়া
জেনারেল প্রসূতি ও গাইনি এবং ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
কনসালট্যান্ট, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ