বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ শনিবার মতবিনিময় করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই মতবিনিময় শুরু হবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো তাঁর দৈনন্দিন সূচিতে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার উপদেষ্টা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলকেই মতবিনিময়ে চাইছি।
মতবিনিময়ে আগ্রহীরা সবাই আসবে। দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করলে বুঝতে পারবেন।’
জানা গেছে, আজ শুধু মতবিনিময় হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ পরে হবে।
সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার চায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সব সময় বোঝাপড়া থাকুক। কারণ আমাদের পরে তারাই তো নাগরিকদের নিয়ে দেশ চালাবে। তাই তারা (রাজনৈতিক দল) কী চায়, তারা কী সংস্কার চায়, তা আমরা জানতে চাই। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টা তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তা জানবেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। বৈঠকে রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাকে সংলাপে বসার আহ্বান জানান বিএনপি নেতারা।
সূত্র জানায়, বৈঠকে আগামী দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে একটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করতে পারেন বলে বিএনপি প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এর আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করবে সরকার। আলোচনার পর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করবে।
এর পর নির্বাচন সম্পন্ন করার রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তবে আজ কোন কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মতবিনিময় করবেন, তা তাঁর দপ্তর থেকে জানানো হয়নি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বুঝে নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ। বিএনপির পক্ষ থেকে এই সরকারকে স্বাগত জানানো হলেও গত ২৪ আগস্ট থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন প্রশ্নে ‘অতি দ্রুত’ সংলাপের দাবি জানান।
এরপর জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস তাঁর সরকারের যে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, সেখানে নির্বাচন প্রশ্নে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না। তাতে ‘হতাশা’ প্রকাশ করে ফখরুল বলেছিলেন, তাঁদের প্রত্যাশা ছিল মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন নিয়ে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন। অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে, সে প্রসঙ্গে সেদিন তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু মানুষের সংস্কারে’ তিনি বিশ্বাস করেন না।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার যমুনায় আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার ডাক পান বিএনপি নেতারা। সেখানে সোয়া এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন, তাঁদের মধ্যে অত্যন্ত ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ের উদ্যোগ নিল ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার।