
আতিক, ঢাবি প্রতিনিধি বঙ্গনিউজঃ ঢাবি অধিভুক্ত কলেজ অব নার্সিং, শেরে বাংলা নগর কলেজের দুইজন নারী শিক্ষার্থী (স্বর্ণা ও নাবিলা) তাদের এমবিবিএস এর ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে ঢাবির রেজিস্ট্রার ভবনে যায়। কর্তব্যরত কর্মচারী আলামিন তার কাছে ৬০০০ টাকা ঘুষ চায়। পরে ঐ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ঢাবির সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আই-ই-আরের শিক্ষার্থী শাহিন ও ঢাবির মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী মেশকাত স্বাধীনের সহযোগিতা নিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা তাদের মারধরের চেষ্টা করে। তারপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার ভবনের ৩০৯ নাম্বার রুমে গেলে আল আমিন ও তার ছোট ভাই রেজিস্ট্রার ভাবনেরই কর্মচারী হাসান পলায়ন করে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জনাব মোঃ বাহালুল হক চৌধুরী এবং উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রুকুনুজ্জামান সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ছিলেন এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ সজিব ছিলেন। এছাড়া ভুক্তভোগী, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও বঙ্গ-নিউজ ঢাবি প্রতিনিধি উক্ত তদন্ত কমিটির মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বঙ্গ নিউজ ঢাবি প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,” রেজিস্ট্রার ভবনে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। এ ধরনের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তারপর তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। আজ বিকাল ৪.০০টায় তদন্ত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর লিখিত বক্তব্য:
“আমি ফাহমিদা রহমান সরনা আমার কলেজ অফ নার্সিং থেকে বিএসসি ইন নার্সিং পাস করেছি। আমি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কিছু পেপারস সত্যায়িত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড বিল্ডিং এর ৩০৯(খ) নাম্বার রুমে গিয়েছিলাম। সেখানে আলামিন নামে একজন আমার কাছে ৬০০০ টাকা দাবি করে। আমি পেপারস বাবদ ২৮০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করেছিলাম। তারপরও সে ৬০০০ টাকা চায় আমার কাছে। এই ব্যাপারে প্রতিবাদ করায় সে আমার একজন বড় ভাইয়ের গায়ে হাত তুলে এবং আমার বান্ধবীর গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করে।”
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সাপেক্ষে গৃহীত পদক্ষেপ:
অদ্য ২৮/০৮/ ২০২৪ তারিখে বিকাল ৪ টায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে ট্রান্সক্রিপ্ট রাখার কর্মরত সম্পূর্ণ অস্থায়ী জনাব আলামিনের সাথে কলেজ অফ নার্সিং এর একজন শিক্ষার্থী জনাব ফাহমিদা রহমান স্বর্ণা সাথে অবৈধভাবে আর্থিক লেনদেন বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সভায় নিন্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এখানে উল্লেখ্য জনাব আল-আমিনকে টেলিফোনে এবং খুদেবার্তায় জানানো সত্বেও তিনি সভায় উপস্থিত হননি।
১) সর্বসম্মতিতে অভিযুক্ত আলামিন এই অফিসে কাজ করার সুযোগ পাবে না।
২)অস্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে কর্ম বিধিমালা সহ কর্মকর্তাদের শাস্তির বিধিমালা নির্ধারণ করতে হবে।
৩) আলামিনের ছোট ভাই হাসানের কেন পালালো সে বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।
৪) রেজিস্ট্রার ভবনের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে/জায়গাগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৬) তদারকি কমিটি গঠন করতে হবে এবং এতে একজন আইসিটির কর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৭) রেজিস্ট্রার ভবনে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করতে হবে।
৮) দুর্নীতি বিষয়ে দ্রুত উর্ধতন কর্মকর্তাদের এবং তদারকি কমিটির নজরে তথ্যটি নিয়ে আসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যানার স্থাপন করতে হবে এবং ব্যানারে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা /প্রশাসনের কারো টেলিফোন নাম্বার দিতে হবে।
৯) কাগজপত্র সত্যায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে এবং ব্যানারে তদারকি কমিটির টেলিফোন নম্বর থাকবে।