ইসরায়েলি নৃশংস বিমান হামলায় ৭১ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত

Home Page » জাতীয় » ইসরায়েলি নৃশংস বিমান হামলায় ৭১ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত
শনিবার ● ১৩ জুলাই ২০২৪


সংগৃহীত ছবি-ইসরায়েলী বিমান হামলায় নিহত একাত্তর

বঙ্গ-নিউজ: গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস বিমান হামলায় ৭১ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হতাহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, খান ইউনিসে পরিচালিত এই হামলায় দেইফ ছাড়াও হামাসের আরেক শীর্ষ নেতা রাফা সালামাকেও লক্ষ্য করা হয়েছিল। তবে তারা নিহত হয়েছেন কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ৭ই অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে ১২০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া এবং বর্তমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু করার পেছনে মোহাম্মদ দেইফ মূল কারিগর বলে ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে। দেইফ ইসরায়েলের সর্বাধিক ‘ওয়ান্টেড’ তালিকার শীর্ষে থাকার পাশাপাশি অতীতেও একাধিক হত্যাচেষ্টা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শনিবারের এই হামলায় অন্তত ২৮৯ জন আহত হয়েছেন। নিহত ও আহতদের বেশিরভাগকেই নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা ৪০টিরও বেশি মৃতদেহ গুনেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একের পর এক বিস্ফোরণে সমগ্র এলাকা কেঁপে ওঠে।

রাফার উত্তরাঞ্চল থেকে খান ইউনিস পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলীয় এলাকা ‘মুওয়াসি’কে ইসরায়েল ‘মানবিক অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সুরক্ষার জন্য লক্ষ লক্ষ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে হামলাটি মুওয়াসিতে ঘটেছে কি না।

এই ভয়াবহ হামলার পরিপ্রেক্ষিতেও যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় তিন-পর্যায়ে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি মুক্তির জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে হামাসের কোনও শীর্ষ নেতার মৃত্যু বা আহত হওয়ার ঘটনা চলমান আলোচনাকে ভণ্ডুল করার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সীমিতসংখ্যক বন্দি মুক্তি এবং গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বন্দি মুক্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এছাড়াও হামলাকারীরা প্রায় ২৫০ জনকে অপহরণ করে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি স্থল ও বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ৩৮,৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৮,০০০ এরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধাদের আলাদা করে কোনো হিসাব দেয়নি। ২৩ লক্ষ জনসংখ্যার গাজায় এখন শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেঁচে আছেন। খাদ্যাভাব ও অমানবিক পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার তাদের এই সঙ্ঘর্ষের অবসান কামনা করে বিশ্ব।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৩:৪৮ ● ৫১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ