বঙ্গ-নিউজ: ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচনে নাটকীয় ফল হয়েছে দ্বিতীয় দফার ভোটে। প্রথম দফার ভোটে প্রথম হওয়া কট্টর-ডানপন্থী ন্যাশনাল ব়্যালি (আরএন) পার্টিকে হটিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিজয়ী হয়েছে বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি)। আরএন চলে গেছে তিন নম্বরে। আর দ্বিতীয় হয়েছে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল অ্যালায়েন্স। তবে ভোটে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পাচ্ছে ফ্রান্স। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।
ভোটের আনুষ্ঠানিক চূড়ান্ত ফলে দেখা যাচ্ছে, বামপন্থীদের জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) সর্বাধিক ১৮২টি আসন পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। মধ্যপন্থী জোট এনসেম্বল অ্যালায়েন্স ১৬৮টি আসনে জিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর কট্টর ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) পেয়েছে ১৪৩টি আসন।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে মোট আসন ৫৭৭। সরকার গঠন করার ম্যাজিক নাম্বার ২৮৯ অর্থাৎ, কোনো দল বা জোটকে সরকার গঠন করতে জিততে হবে ২৮৯ আসনে। দুই দফা ভোটের চূড়ান্ত ফলে তিনটি জোটের কেউই সরকার গঠন করার ম্যাজিক নাম্বার অর্জন করতে পারেনি। এ অবস্থায় ঝুলন্ত পার্লামেন্ট পাওয়ার পথে রয়েছে ফ্রান্স। যদিও এর আগে এই তিন জোটের কেউ একসঙ্গে সরকারে কাজ করেনি।
সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিজের জোটের ভরাডুবি ঘটে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর। এরপর হঠাৎ করেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
দেশটিতে দুই দফা ভোটের রীতি অনুযায়ী গত ৩০ জুন প্রথম দফার ভোটে কট্টরপন্থী নেত্রী ম্যারিন লে পেনের দল আরএন ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়। নতুন গড়ে উঠা বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট দ্বিতীয় হয় ২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন মধ্যপন্থি এনসেম্বল অ্যালায়েন্স মাত্র ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে চলে যায় তৃতীয় অবস্থানে।
এবার নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের আশা নিয়ে দ্বিতীয় দফা ভোটের প্রহর গুনতে থাকে কট্টরপন্থীরা। অন্যদিকে হঠাৎ করে কট্টরপন্থীদের এমন উত্থানে দেশটিজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কট্টরপন্থীদের বিরুদ্ধে প্যারিসসহ ফ্রান্সে বিক্ষোভ-মিছিল পর্যন্ত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কট্টরপন্থীদের ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠে মধ্যপন্থী, বামপন্থী ও সমমনা দলগুলো। তারা দ্বিতীয় দফা ভোটে কট্টর আরএনকে ঠেকাতে একজোট হয়ে লড়াইয়ে নামে। তার আগেই আসন বুঝে নিজেদের একক প্রার্থী রেখে অন্যদের প্রত্যাহার করে নেয়। আর তাতেই এসেছে সফলতা।
দ্বিতীয় দফা ভোটের ফল পেয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় কট্টরপন্থী আরএন দলের প্রধান জর্ডান বারডেলা বলেন, আমাদের ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে দেশে ‘অপ্রাকৃতিক রাজনৈতিক জোট’ গড়া হয়েছে। আমরা শুধু ক্ষমতার জন্য ক্ষমতা চাই না।
এদিকে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় কে হবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী অর্থাৎ, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে কে নেতৃত্ব দেবেন- সেটি নিয়ে সামনের দিনগুলোতে দর কষাকষিতে যাবে রাজনৈতিক দলগুলো। এরই মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সাত মাস আগে প্রধানমন্ত্রী পদে আসা গ্যাব্রিয়েল আটাল।