বঙ্গ-নিউজ: বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ দুপুর দেড়টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি দেশবাসীর কাছে তার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া চান।
ফখরুল বলেন, ‘আমি দুপুর দেড়টার দিকে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে এসেছি। তিনি সিসিইউতে আছেন। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকরা তার কক্ষে সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড সন্ধ্যায় আবারো বৈঠকে বসবে বলে জানান তিনি।
সকলের কাছে দোয়া চেয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমি সকলের কাছে ম্যাডামের দ্রুত আরোগ্য কামনায় দোয়া চাই। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থতা দান করেন।’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতালে এসে চিকিৎসকদের সাথে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। তার চিকিৎসা চলমান রয়েছে।’
উল্লেখ্য, শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে তাকে দ্রুত সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয় এবং মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন।
গত ১ মে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেই সময় দুই দিন তিনি সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, বাত, ডায়াবেটিস, কিডনী, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড এবং চোখের সমস্যাসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে বারবার চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি প্রধান।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।
গত বছর ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমা এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য তিনজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ‘ট্রান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট’ (টিআইপিএস) নামে একটি জটিল চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।