এখন চলছে রসালো ফলের মৌসুম। বাজারে আম, কাঁঠাল, লিচু এসেছে। পরিবারের ডায়াবেটিসের রোগীর মন খারাপ। কারণ, মন চাইছে সব ফল খেতে, কিন্তু বাড়ির লোকজনের কড়া নিষেধ। আসলেই কি তা-ই? আম খুবই পুষ্টিকর ও মৌসুমি ফল। আম অবশ্যই খাবেন। যেহেতু আমে প্রচুর শর্করা ও ক্যালরি থাকে, তাই যাঁদের ওজন বেশি আর ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা সারা দিনে মাঝারি আকারের একটি আম খেতে পারবেন। কখনো শর্করার বদলে শর্করা, মানে আম খেলে তার বদলে অন্য শর্করা, যেমন ভাত-রুটি বাদ দিতে হবে। অথবা ৪০ মিনিটের পরিবর্তে এক থেকে দেড় ঘণ্টা হাঁটতে হবে।আমে কোনো খারাপ চর্বি থাকে না। এমনকি ক্ষতিকর লবণও নেই। ১০০ গ্রাম একটি আমে ৭৯ থেকে ৮২ গ্রাম ক্যালরি পাওয়া যায়। এ ছাড়া একটি আমে ৭৫ থেকে ৮৫ শতাংশ পানি থাকে। জুসের চেয়ে তাজা আম খাওয়া বেশি উপকারী। আমে আঁশও থাকে। আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিন্তু মাঝারি মাত্রার। এটি নির্ভর করে আমের জাতের ওপর। যে আমে আঁশ বা ফাইবার বেশি, তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম।
কাঁচা আমও দারুণ উপকারী। কাঁচা আমে শর্করার পরিমাণ কম থাকে। দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এটি বাইল অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়ায়। দেহে নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।যাঁদের কিডনি ও ডায়বেটিস বা শুধু কিডনির সমস্যা আছে, তাঁরা অবশ্যই চিকিৎসক অথবা পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাবেন। আমে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।ডায়াবেটিসের রোগীরা কাঁঠাল নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। আসলে কোন খাবারে দেহে শর্করার মাত্রা কতটা বৃদ্ধি পায়, তা গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক শর মধ্যে কাঁঠালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মান প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ, অর্থাৎ কাঁঠালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি মাত্রার।কাঁঠালে প্রচুর ফাইবার আছে, যা শর্করার মাত্রা বাড়াতে বাধা দেয়। কিন্তু ডায়াবেটিক রোগী ইচ্ছেমতো কাঁঠাল খেতে পারবেন না। কারণ, এটি মিষ্টি ফল। সারা দিনে তিন থেকে চারটি কোয়া, অর্থাৎ ৫০ গ্রাম খেতে পারবেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওই দিন অন্য আর কোনো মিষ্টি ফল খাবেন না।কিডনি রোগীদের জন্য কাঁঠাল নিষেধ, বিষয়টি মনে রাখতে হবে। কারণ, এতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে।
হাসিনা আকতার লিপি, ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড ও পার্ক ভিউ, হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেড, চট্টগ্রাম