বঙ্গ-নিউজ: বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্যাটিং দৈন্যদশার সবটাই যেন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে প্রকাশ হয়ে গেল। জিতলেই শেষ আট। অথচ এমন এক সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়েও নাজমুল শান্ত-সাকিব আল হাসানদের ব্যাট হাতে তাড়াহুড়া প্রশ্ন ওঠার মতোই। সবাই ফিরলেন মাত্র ১০৬ রানে। কিন্তু তখনও যে বাকি ছিল আরও কিছু। বল হাতে এলেন তানজিম হাসান সাকিব। হিসেব পাল্টালেন। দলকে জেতালেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ আটে নিয়ে গেলেন বাংলাদেশকে। ২১ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল শান্ত বাহিনী।
পুরো ১১ জনের কেউই যেতে পারেননি বিশের ঘরে। সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছেন সাকিব। ৮৮ রানে নয় উইকেট হারানোর পর টাইগারদের দলীয় শতরান পার হয় তাসকিন আহমেদের ১২ রানের কল্যাণে। নির্ধারিত ২০ ওভারও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৯.৩ ওভারেই বিদায় নেন সবাই।
স্কোরবোর্ডে রান যোগ হওয়ার আগেই বিদায় নেন তানজিদ তামিম। গোল্ডেন ডাকে তিনি ফেরেন সোমপাল কামির উদ্বোধনী ওভারে। এই ম্যাচেও ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন শান্ত। পাঁচ বলে চার রান করে দিপেন্দ্র সিংয়ের কাছে ধরা দেন তিনি। লিটন দাস রান তোলার চেষ্টা করে ১০ রানে কামির বলে পরাস্থ হন। এর পরপরই তাওহীদ হৃদয় সাত বলে নয় রান করে লিটনের পথ ধরেন।
মাহমুদউল্লাহ, সাকিবের সঙ্গে ইনিংস মেরামত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন মাহমুদউল্লাহ। ১৩ বলে ১৩ রান করেন তিনি। সাকিবের সঙ্গে তার জুটি হয় ২২ রানের। দলীয় ৬১ রানে রোহিত পুডেলের শিকার হন সাকিব।
তানজিম সাকিব তিন রান ও জাকের আলী ১২ রান করেই ফিরে যান। রিশাদ হোসেন ইনিংসের একমাত্র ছক্কা হাঁকালেও সাতবলে ১৩ রান করেই ফেরেন। জাকের ও রিশাদের উইকেট নেন লামিচানে।
বাংলাদেশ হয়তো শতরানও করতে পারবে না এই শঙ্কা থেকে উদ্ধার করেন তাসকিন আহমেদ। তার ১২ রানে ভর করে ১০৬ করতে সক্ষম হয় শান্ত বাহিনী। মোস্তাফিজুর রহমান তিন করে রানআউট হন।
নেপালের পক্ষে সোমপাল কামি, সন্দ্বীপ লামিচানে, রোহিত পৌদেল ও দিপেন্দ্র সিং ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।
১২০ বলে ১০৭ রানের ছোট লক্ষ তাড়া করতে নেমে নেপালও বেশ বিপাকে পড়ে। বাংলাদেশ দলের তরুণ তারকা পেসার তানজিমের গতির মুখে পড়ে মাত্র ৪.২ ওভারে ২০ রানে তিন উইকেট হারায় নেপাল।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে নেপালের শিবিরে আঘাত হানেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন নেপালের তারকা ব্যাটসম্যান আসিফ শেখ। এরপর আবারও তানজিমের আঘাত আসে। এক রান করা সন্দীপ জোরাকেও ফেরান তিনি।
কুশল মল্লা ও দীপেন্দ্র সিংয়ের ব্যাটে ভালোই এগিয়ে যায় নেপাল। কিন্তু ১৬.৪ ওভাবে মুস্তাফিজের বলে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুশল। তার নামের পাশে তখন ২৭ রান।
এরপর আর তেমন কেউই বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি। দীপেন্দ্র ২৫ রান করলেও চারজনই ফিরে গেছেন শূন্য রানে। ১০ম ব্যাটসম্যান অবিনাশ এক ছক্কা হাঁকিয়ে করেন ১০ রান।
বল হাতে দুর্দান্ত তানজিম চার ওভারে মাত্র সাত রান দিয়ে পেয়েছেন চার উইকেট। এছাড়া মুস্তাফিজ তিনটি, সাকিব দুইটি ও তাসকিন একটি উইকেট নেন।
এই ম্যাচ জয়ের ফলে বাংলাদেশ পৌঁছে গেল শেষ আটে যেখানে আগেই গ্রুপ ডি থেকে পৌঁছে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা।