বঙ্গনিউজ: এই না হলে রিয়াল মাদ্রিদ! যে দলটি প্রথমার্ধে বলতে গেলে পাত্তাই পায়নি বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে, প্রথম এক ঘণ্টায় তৈরি করতে পারেনি বলার মতো কোনো সুযোগ। সেই দলটিই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৯ মিনিটের মধ্যে করলো দুই গোল।
ভাগ্যকে হয়তো দুষতে পারে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, সঙ্গে নিজেদেরও। প্রথমার্ধে দারুণ সব প্রচেষ্টার পর, দ্বিতীয়ার্ধে এ কী হলো তাদের! চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের করে নিলো রেকর্ড ১৫তম শিরোপা। ফাইনালের মতো মঞ্চেও রিয়াল মাঠ ছাড়ল ২-০ গোলের অনায়াস জয় নিয়ে। পেল আরও একটি শিরোপার স্বাদ।
চ্যাম্পিয়নস লিগের রিয়ালকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু। আরও একবার প্রমাণ করে দিল কেন তারা টুর্নামেন্টটির সবচেয়ে সফল দল। ভাগ্যও হয়তো চেয়েছিল ১৫তম শিরোপাটি এবারই উঠুক তাদের হাতে। নইলে কেনই বা নিকলাস ফুলক্রুগের সেই শট পোস্টে লেগে ফিরে আসবে।
ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রেফারি বাঁশি বাজানোর পর অগোছালো ছিল রিয়াল। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ডর্টমুন্ড। ভাগ্য জার্মান ক্লাবটিকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে বারববার। ম্যাচের প্রথম সুযোগটি আসে ২১ মিনিটে। ম্যাট হামেলসের সময়োপযোগী পাস দখলে নিয়ে রিয়াল গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান করিম আদেয়েমি। কিন্তু শট নিতে নিতেই তার সামনে বাধা হয়ে আসেন দানি কারভাহাল।
ফাইনালের আগে চ্যাম্পিয়নস লিগে আগে কোনো ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন না কোর্তোয়া। খেলার কথা ছিল অবশ্য আন্দ্রি লুনিনেরই। ফ্লু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সময়মতো অনুশীলন করতে পারেননি বলে তাকে নিয়ে ঝুঁকি নেননি কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
কিন্তু কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল ডর্টমুন্ড। ২৩ মিনিটে মাতসেনের কাছ থেকে বল পেয়ে গোলমুখে শট নেন ফুলক্রুগ। তা ঠেকানোর জন্য দুই হাত ছড়িয়ে দিয়েও পারেননি কোর্তোয়া। তবে শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে বাঁচানোর ভূমিকাটা পড়ল বারপোস্টের কাঁধে! যা গোল থেকে বঞ্চিত করে ডর্টমুন্ডকে। ২৮ মিনিটে দারুণ এক সেভে রিয়ালকে রক্ষা করেন কোর্তোয়া।
তাই গোলশূন্য ড্র নিয়ে কোনোমতে বিরতিতে যেতে পারায় স্বস্তি পায় রিয়াল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। সেই স্বপ্ন পূরণ করেই ছাড়ে মাঠ। টনি ক্রুসের ক্লাব ক্যারিয়ারের শেষটাও তা-ই হলো রাজকীয়ভাবে। অবসর নিতে যাওয়া এই জার্মান মিডফিল্ডারের কর্নার থেকেই হেডে ৭৪ মিনিটে ডেডলক ভাঙেন দানি কারভাহাল। দ্বিতীয় গোল পেতে রিয়ালকে অপেক্ষা করতে হয় কেবল ৯ মিনিট। সেই গোলটি এল ব্যালন ডি অরের দৌড়ে থাকা দুই তরুণের কৃতিত্বে। জুড বেলিংহ্যামে পাস থেকে খুব সহজেই জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এরপর আর কী, কোনো অঘটন ছাড়াই হাজির হলো রিয়াল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মুহূর্ত।
৮৭ মিনিটে অবশ্য একটি গোলের দেখা পায় ডর্টমুন্ড। কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয় ফুলক্রুগের গোল। ভাগ্য পাশে না থাকার আভাসটা তো তিনিই প্রথমে পেয়েছিলেন।