বঙ্গনিউজ ডেস্ক : টানা খরার পর হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সোমবার দিনভর বৃষ্টিতে উপজেলার ২৪টি চা বাগানে স্বস্তি ফিরেছে। বৃষ্টির কারণে পরিবেশ ঠান্ডা হওয়ায় চা শ্রমিকরা খুবই খুশি। এতে চা উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছেন মালিকপক্ষ।
চুনারুঘাট চন্ডিছড়া চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিভেজা চায়ের কুঁড়িতে অনন্য সৌন্দর্যের হাতছানি। চা পাতা তুলতে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ বিষয়ে চা শ্রমিক মালিন্দ্রি গোয়ালা বলেন, গরমে চা গাছগুলো পুড়ে গিয়েছিল আমাদের কাজ করতে খুব কষ্ট হতো। সৃষ্টিকর্তার মেহেরবানিতে সোমবার দিনভর বৃষ্টি হচ্ছে। চা বাগানের স্বস্তি ফিরেছে। চা গাছে নতুন করে কুঁড়ি দিতে শুরু করেছে।
চন্ডিছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিমুর রহমান বলেন, এবার খরার ক্ষতি পুষিয়ে দ্বিগুণ চা উৎপাদন করা যাবে। ইতিমধ্যে আমরা প্রথম ধাপের চা উৎপাদন করে ফেলেছি। আশা করি এবার ভালো ফলন হবে।
চন্ডিছড়া চা বাগানে দেখা গেছে, চা কারখানায় সবুজ কুঁড়ির স্তূপ। কারখানা সবুজ চা পাতার কুঁড়ি থেকে চা প্রস্তুত করতে ব্যস্ত। সব প্রক্রিয়া শেষে কুঁড়িগুলো রয়েছে বাজার জাতের অপেক্ষায়।
চা বাগান সূত্রে জানা যায়, এ বছর চুনারুঘাট উপজেলার ২৪টি চা বাগানে সোয়া এক কোটি কেজি চা পাতা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাগানগুলোতে উৎপাদন শুরু হওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশা বাগান কর্তৃপক্ষের।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বরজিৎ ফারসী বলেন, সারা দিনের বৃষ্টিতে চা বাগানগুলোর জন্য অনেক ভালো হয়েছে। এ সময়টাতে বৃষ্টি না হলে পাতা লালচে রঙ ধারণ করাসহ গাছে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। চা শিল্প প্রকৃতি এবং শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতির আচরণ যদি ভালো হয়, তাহলে উৎপাদন ভালো হয়। এ বছর যদিও বিলম্বে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। তারপরও বাগানগুলোতে আশানুরূপ উৎপাদন হবে।
দেউন্দি চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক দেবাশীষ দাশ বলেন, বৃষ্টি হওয়াতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কমেছে। দিনের বৃষ্টির পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাবে। অন্যান্য বছর আরও আগেই বৃষ্টি হয়। ফলে এই সময়ে বাগানের উৎপাদন থাকতো সর্বোচ্চ পর্যায়ে। যেহেতু এখনও মৌসুমের শুরু অবস্থা, তাই যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে মৌসুম শেষে অনেক ভালো উৎপাদন হবে। এ বছর দেউন্দি চা বাগানের লক্ষ্যমাত্রা ১০ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা উৎপাদন ধরা হয়েছে।
চুনারুঘাট ইউএনও আয়েশা আক্তার বলেন, রোদবৃষ্টি ঝরে চা বাগানের নারী শ্রমিকরা চা পাতার কুঁড়ি তুলতে ব্যস্ত থাকেন। বজ্রপাতসহ নানা দুর্যোগে তাদের যাতে সুরক্ষা দেওয়া হয় সে ব্যাপারে আমি চা বাগান ব্যবস্থাপকদের বারবার তাগিদ দিয়েছি এবং আমি নিয়মিত চা বাগান পরিদর্শন করছি।
সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, শ্রমিকদের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে। কাজের সময় তাদের খাবার পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। খাবার স্যালাইনসহ ছাতার ব্যবস্থা রাখার জন্য বাগান মালিকদের আমি অনুরোধ করেছি।