
বঙ্গনিউজঃ সুযোগ ছিল যুদ্ধবিমান ফেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের জীবন রক্ষা করার। কিন্তু নিজের পেশাদার আচরণ, বিবেক আর অভিজ্ঞতার কারণে তিনি তা করেননি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে সবাইকে রক্ষা করতে। কারণ জায়গাটি বেশ ঘনবসতিপূর্ণ ছিল। সেখানে বিমানটি বিধ্বস্ত হলে বহু মানুষ হতাহতের শিকার হতো বলেও শঙ্কা ছিল পাইলটদের। তাইতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিমানটিকে নদীতে ফেলার চেষ্টা করেছেন। আর এতে জীবনটাই দিয়ে দিতে হলো ৩২ বছর বয়সী যুদ্ধবিমানের পাইলট বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদকে।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাইলটদের বীরত্বের কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। সে সময় বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে বিমানবন্দরের পাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যান দুই পাইলট। এর ফলে অনেক বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায় স্থানীয় মানুষজন।
এ দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা দুই পাইলটের মধ্যে অসীম জাওয়াদ নামে একজন মারা গেছেন। তিনি বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই দুর্ঘটনায় আহত হন পাইলট সোহান। তিনি বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
নিজের প্রাণ দিয়ে শত জীবন বাঁচিয়ে গেলেন আসিম জাওয়াদ
মেডিকেলে সুযোগ পেয়েও হননি ভর্তি, স্বপ্নপূরণ করেন পাইলট হয়ে
১৯৯২ সালের ২০ মার্চ মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডা. মো. আমান উল্লাহ এবং মাতার নাম নীলুফা আক্তার খানম। তিনি ২০০৭ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০৯ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১২ সালে বিইউপি থেকে বিএসসি পাস করেন।
স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি শাখায় কমিশন লাভ করেন। চাকরিকালে তিনি বিমানবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ছিলেন।